(বাঁ দিকে) কাজল শেখ এবং অনুব্রত মণ্ডল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দলের অন্দরেই সংশয় ছিল। সেই সংশয় সত্যি করে তৃণমূলের ব্লক ভিত্তিক বিজয়া সম্মিলনীতে শনিবার জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের খাসতালুক হিসাবে পরিচিত নানুরের সভামঞ্চে দেখা গেল না বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে।
এ দিনই অনুব্রত জেলার অন্য দুই ব্লক ময়ূরেশ্বর ১ ও ২-এর বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে অবশ্য উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে এ দিন নানুরে কাজলের মঞ্চে অনুব্রতের অনুগামী এবং কাজল-বিরোধী হিসাবে পরিচিত একাধিক নেতাকে দেখতে না-পাওয়া গেলেও তাঁরা ছিলেন অনুব্রতের সভায়। এই ঘটনার পরে কাজল-কেষ্ট পুরনো ‘দ্বন্দ্ব’ নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে দলে।
দল সূত্রের খবর, প্রথমে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে ব্লক ভিত্তিক বিজয়া সম্মিলনীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে নানুর, লাভপুর এবং সিউড়ি ২ ব্লকের নাম ছিল না। ওই তালিকা অনুযায়ী শনিবার ময়ূরেশ্বর ১ ও ২ ব্লকে বিজয়া সম্মিলনী হওয়ার কথা ছিল। পরে সংযোজিত তালিকায় বাদ পড়া ব্লকগুলির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী এ দিন নানুরেও বিজয়া সম্মিলনী করার কথা ঘোষণা করা হয়। তড়িঘড়ি সেখানে মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়ে যায়। শুক্রবার সেই কাজ খতিয়ে দেখেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ।
ময়ূরেশ্বরের দুই ব্লকের পাশাপাশি নানুরেও অনুব্রতের থাকার সম্ভাবনার কথা শুক্রবার জানিয়েছিলেন কাজল। কিন্তু, সেখানে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান, নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা-সহ আরও কয়েক জন পুরনো নেতাকর্মী ডাক পাননি বলে অভিযোগ। তাতে নানুরে অনুব্রতের থাকা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। এবং সেটাই সত্যি হয়েছে।
এ দিন ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের ছামনা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বেসরকারি শিক্ষক-শিক্ষণ কলেজের মাঠে বিজয়া সম্মিলনীতে অনুব্রতের সঙ্গে ছিলেন গদাধর হাজরা। তিনি বলেন, “নানুরের বিজয়া সম্মিলনীতে থাকার জন্য কেউ আমাকে বলেনি। ময়ূরেশ্বরে কোর কমিটির পক্ষ থেকে আসতে বলা হয়েছিল। তাই দলের কর্মী হিসাবে এসেছি।” অনুব্রত বক্তৃতা দেওয়ার সময় এক সঙ্গে চলার বার্তা দেন।
শুক্রবার তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “কেরিম, গদাধর দলের কে, যে তাঁদের ডাকতে হবে?” সেই গদাধরই এ দিন অনুব্রতের সঙ্গে একই মঞ্চ ভাগ করার পরে অনুব্রত-অনুগামীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, “ওঁরা যদি কেউ না হন, তা হলে দলের জেলা সভাপতির উপস্থিতিতে মঞ্চে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান কী করে?”
নানুরে অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, “এক দিনে একাধিক জায়গায় বিজয়া সম্মিলনী হচ্ছে। সব জায়গায় আমার পক্ষে কি থাকা সম্ভব? ওখানে বিকাশ রায়চৌধুরী (সিউড়ির বিধায়ক ও কোর কমিটির আহ্বায়ক)-সহ অন্যান্য নেতারা আছেন।” আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রশ্নে অনুব্রত বলেন, “ওটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলবেন।” কাজলও বলেছেন, “উনি (অনুব্রত) অসুস্থ। একই দিনে তিন জায়গায় সম্মিলনী। ময়ূরেশ্বর থেকে দূরত্বও কম নয়। সেই জন্য আসতে পারেননি।”
তাতেও চর্চা থামছে না। কারণ, এখনও যে যে ব্লকে অনুব্রত বিজয়া সম্মিলনী করেছেন, তার একটিতেও উপস্থিত থাকেননি কাজল শেখ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy