আসানসোল আদালত চত্বরে অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: পাপন চৌধুরী
প্রায় একশো দিন হয়ে গেল তিনি জেলে রয়েছেন। শুক্রবার ফের আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ৯ ডিসেম্বর ফের তাঁকে আদালতে তোলার নির্দেশ দেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। এ দিন আদালত চত্বরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা অনুগামীদের কাছে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির খোঁজ নেওয়ার ফাঁকে অনুব্রতকে বলতে শোনা গেল, ‘‘তোরা আমাকে বার করতে পারছিস না! মরে গেলাম যে!”
অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে ইডি আবেদন করেছিল। এ বিষয়ে ওই আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেছেন অনুব্রতের আইনজীবীরা। হাই কোর্টে বিচারপতি সুধীরকুমার জৈনের বেঞ্চে এ দিন অনুব্রতের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “এই একই বিষয়ে অন্য বেঞ্চে মামলা ঝুলে রয়েছে। সেখানেই শুনানি হওয়া উচিত।” ইডি পাল্টা যুক্তি দেয়, অনুব্রতের দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনের ক্ষেত্রে বিচারপতি জৈনের বেঞ্চেই শুনানি হয়েছিল। এর পরে বিচারপতি নির্দেশ দেন, ১ ডিসেম্বর যথাযথ বেঞ্চে শুনানি হবে। ফলে, শনিবার রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে অনুব্রতকে দিল্লিতে হাজির করানোর পরোয়ানা জারির আর্জি সংক্রান্ত যে শুনানি হওয়ার কথা ছিল, তা হবে না।
অনুগামীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি হাই কোর্টের শুনানি নিয়েও তাঁদের কাছে খবর নেন অনুব্রত। আদালতে তাঁর আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ এ দিন জামিনের আবেদন করেননি। চার্জশিট এবং এখনও পর্যন্ত যা তদন্ত হয়েছে, সে সংক্রান্ত নথির প্রতিলিপি চেয়ে আবেদন করেন। সিবিআই এ দিন অনুব্রতের কন্যা সুকন্যার নামে আরও একটি ‘ভুয়ো’ সংস্থা ও সেটির প্রায় দশ কোটি টাকার সম্পত্তির নথি আদালতে পেশ করে। আদালতে সিবিআই জানায়, ইতিমধ্যে অনুব্রতের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্তকে চার্জশিটের পাঁচটি কপি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত-রিপোর্টের নথি যতটা দেওয়া সম্ভব, তা পরবর্তী শুনানির আগে দেওয়া হবে। অনুব্রতের একটি চালকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী সোমনাথ। এ বিষয়ে ৯ ডিসেম্বর শুনানির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতে কক্ষে শুনানি-পর্বের পরে, অনুগামীদের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত ওরফে কেষ্ট। সূত্রের দাবি, দলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কাছে তিনি জানতে চান, ‘পঞ্চায়েতে জিতবি তো?’ পাশে থাকা এক জন দলে কিছু বিশৃঙ্খলার কথা জানিয়ে বলেন, ‘তুমি নেই তো, তাই এই অবস্থা।’ তখন অনুব্রতের মন্তব্য, “তা কেন? রাজা বিনা কি রাজত্ব চলে না? কিন্তু তোরা আমাকে বারই করতে পারছিস না! মরে গেলাম যে!” তাঁকে এর পরে চোখ মুছতেও দেখা যায়। তবে দ্রুত সামলেও নেন কেষ্ট। কয়েক জন অনুগামীর দাবি, জামা গায়ে ঢলঢলে হয়ে গিয়েছে দাবি করে শরীর ভাল নেই, এ দিন এমনটা বোঝানোরও চেষ্টা করেছেন কেষ্ট। ২৭ নভেম্বর বীরভূমে বিজেপির মিঠুন চক্রবর্তীর সভা করার কথা। তার পাল্টা বড় জমায়েত করার বার্তাও দিয়েছেন অনুব্রত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy