Advertisement
E-Paper

বাবা, মা, বোনের পর মৃত্যু হল কিশোর সুদীপেরও! কুম্ভ যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে সাত

শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ ধানবাদের রাজগঞ্জ থানা এলাকায় জাতীয় সড়কের উপরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রাকের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায় একটি চার চাকার গাড়ি।

মৃতের শোকার্ত পরিবার।

মৃতের শোকার্ত পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:১৬
Share
Save

আগেই মৃত্যু হয়েছে বাবা, মা এবং বোনের। এ বার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হল কিশোর সুদীপেরও! শুক্রবার গভীর রাতে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে যাওয়ার পথে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয় বাংলার ছয় পুণ্যার্থীর। সুদীপের মৃত্যুর পর ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল সাত।

শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ ধানবাদের রাজগঞ্জ থানা এলাকায় জাতীয় সড়কের উপরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রাকের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায় একটি চার চাকার গাড়ি। মৃত্যু হয় গাড়িতে থাকা চার জনের। পরে হাসপাতালে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গড়বেতা থানার নলপা গ্রামের প্রণব সাহা (৪২), তাঁর স্ত্রী শ্যামলী সাহা (৩৪) এবং তাঁদের বছর পাঁচেকের শিশুকন্যা অন্বেষা। বাবা,মা, বোন মারা গেলেও ধানবাদেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল তাঁদের ছেলে সুদীপ (১৩)। কিন্তু শেষরক্ষা হল না! রবিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হল সুদীপেরও।

রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার ওই কিশোরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরিবারে এই খবর পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। শোকের ছায়া নেমেছে গ্রামেও। উল্লেখ্য, শনিবার রাতেই গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল শিশুকন্যা-সহ দম্পতির নিথর দেহ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তের পর সোমবার সুদীপের দেহও নিয়ে আসা হবে গড়বেতার নলপার বাড়িতে। প্রণবদের সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন তাঁর শ্যালিকা পিয়ালি সাহা, তাঁর স্বামী স্বরূপ সাহা এবং তাঁদের দুই সন্তান। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে পিয়ালি (৩০) ও তাঁর শিশুকন্যা আগমনী (৬)-র। হুগলির গোঘাটের বাসিন্দা ছিল ওই পরিবার। তবে স্ত্রী-মেয়ের মৃত্যু হলেও এখনও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন স্বরূপ।

নলপায় প্রণবদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, চারপাশে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। বাড়ির এক তলায় প্রণবের ঘরটি দেখিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যেরা বলছেন, ‘‘এই ঘরটা আমাদের কাছে চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল। এই ঘরে আমরা আর কেউ থাকতে পারব না। কোনও দিন এই ঘরটা আর খুলতেও পারব না।’’ খবর পাওয়ার পর থেকেই বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন প্রণবের বৃদ্ধা মা সুমিত্রা সাহা। জ্ঞান ফিরলেই বলছেন, ‘‘ওরে গোপাল রে, তুই আমাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেলি রে!’’

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দেহগুলিকে রাজ্যে ফেরানোর ব্যাপারে প্রশাসনকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। গড়বেতা থেকে প্রয়াগরাজ রওনা দিয়েছিলেন প্রণবেরা। হুগলির গোঘাট থেকে শ্যামলীর বোন পিয়ালি-সহ মোট ১১ জন গাড়িতে ওঠেন। এর পরেই শুক্রবার রাত ১টা চল্লিশ নাগাদ পথদুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়িটি। মৃত্যু হয় পরিবারের তিন সদস্যের। এ ছাড়া গাড়ির চালক শেখ রাজন আলিরও মৃত্যু হয়েছে। তিনি কামারপুকুরের বাসিন্দা। পরে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়। বাকি আহতেরা এখনও ধানবাদের জে পি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Road Accident Accident Death

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}