প্রতীকী ছবি।
সিংহবাহিনী দুর্গার আগেই বাঘ ঢুকেছিল সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা গ্রামে। তার থেকে বড় জোর কিলোমিটার পাঁচেক দূরে মাতলার খাঁড়ির ধারে ঠাকুররানি নদীর চর।
জঙ্গল-ঘেঁষা সেই তল্লাটে পুজোর খবর পেয়ে চমকে উঠেছিলেন বেহালার পুজোকর্তা সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কুলতলির কাছে সেই পুজো এ বছর আমপানের ধাক্কায় ভন্ডুল হতে বসেছে শুনেই পরিকল্পনার সলতে পাকানো। নিমপীঠের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম থেকে কুলতলির অখ্যাত জনপদের খবর পেয়ে এখন তার পাশে দাঁড়াচ্ছে বেহালার ডজনখানেক ছোট-বড় পুজো। পুজো ঘিরে গ্রামের জীবনযাত্রা আর একটু ভাল করার নানা বিক্ষিপ্ত প্রয়াসও এখন চোখে পড়ছে।
আমপানের তাণ্ডবের দিন কয়েক পরে কুলতলির শ্যামনগরের যুবক অময় মণ্ডলের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল বেহালার পুজোকর্তাদের। নিমপীঠ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সহযোগিতায় তখন ত্রাণ দিতে সেখানে পৌঁছেছে বেহালার বেশ কয়েকটি প্রথম সারির পুজোর মঞ্চ ‘বেহালা সাংস্কৃতিক সম্মিলনী’ (বিএসএস)। পুজোর সময়ে থিম নিয়ে নিজেদের মধ্যে লাঠালাঠি করলেও শীতকালীন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সম্মেলন থেকে ক্লাব গড়ে ময়দানে ফুটবল— সবেতেই তাঁদের এক সঙ্গে চলতে দেখা যায়। বেহালা নূতন দল, বড়িশা ক্লাব, ঠাকুরপুকুরের স্টেট ব্যাঙ্ক সর্বজনীন, মুকুল সঙ্ঘ, নস্করপুর, বিবেকানন্দ পার্ক অ্যাথেলেটিক ক্লাব, হরিদেবপুর ৪১ পল্লি, দেবদারু ফটক-সহ একাধিক পুজো মিলে ত্রাণযজ্ঞেও একযোগে ঝাঁপিয়েছে। ‘‘গ্রামের দুর্গাপুজো কী করে হবে, এ নিয়ে নানা আফশোসের কথা শুনেই আমরা বিষয়টা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করি।’’— বলছিলেন বিএসএসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপনবাবু।
শ্যামনগর গ্রামের অময়ের কথায়, ‘‘এ বার বেশির ভাগ লোকই চাঁদা দিতে পারছেন না। কেউ আবার অর্ধেক চাঁদা দিচ্ছেন। শ্যামনগর ও দক্ষিণ দুর্গাপুরের একটি পুজোর বেশির ভাগ দায়িত্বই বেহালার দাদারা নিচ্ছেন, এটা ভাল লাগছে।’’ ঝড়ধ্বস্ত গ্রামগুলিতে দু’মাস বিদ্যুৎ ছিল না, শুধু ছিল জীবন ও জীবিকা নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা। করোনা-কালে এ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় উৎসবের রোশনাইটুকু অন্তত প্রত্যন্ত ওই গ্রামবাসীদের জীবনে লেগে থাকবে, এটুকুই ভরসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy