Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
COVID19

করোনা আক্রান্ত হয়ে আবার মৃত্যু কলকাতায়, উত্তরবঙ্গ থেকে বেড়িয়ে আসার পরই অসুস্থ হন বৃদ্ধ

গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। দিন কয়েক আগে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ষাটের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।

death.

নতুন বছরে বঙ্গে প্রথম কোভিডে মৃত্যু হয়েছিল গত ২৫ মার্চ। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৩৯
Share: Save:

করোনা আক্রান্ত হয়ে ফের মৃত্যু পশ্চিমবঙ্গে। গত মাস তিনেক ধরে এ রাজ্যে কোনও কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। নতুন বছরে বঙ্গে প্রথম কোভিডে মৃত্যু হয়েছিল গত ২৫ মার্চ। তার দু’সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই, আজ কলকাতায় করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর মিলল। সাম্প্রতিক কালে কিছু রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বেড়েছে, তার প্রেক্ষিতে এ দিনই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া জানিয়েছেন, আগামী আট থেকে দশ দিন সংক্রমণ ধাপে ধাপে বাড়বে। তার পরে তা কমতে শুরু করবে।

কলকাতায় এ দিন মারা যান রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা ভাস্কর দাস (৭৬)। সম্প্রতি তিনি উত্তরবঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পরে তিনি অসুস্থ হন। গত রবিবার তাঁকে বাঘাযতীন এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃদ্ধকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। গত কাল ওই বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। আজ সকাল ১১টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্রে কোভিড নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করা রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। দিন কয়েক আগে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ষাটের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। মঙ্গলবার রাজ্যে সব থেকে বেশি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কলকাতাতেই— ১৭ জন। আর রাজ্যে এ দিন পর্যন্ত অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৩৭০ জন। সূত্রের খবর, কলকাতার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন ক্রিটিক্যাল কেয়ারেও রয়েছেন।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কাল থেকে গোটা দেশে ৭৮৩০ জন নতুন করে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। দৈনিক সংক্রমণের হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৬৫ শতাংশে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আমজনতা যে মাস্ক পরা বা কিছু খাওয়ার আগে ভাল করে হাত ধোয়ার মতো প্রাথমিক সতর্কতাবিধিতে তেমন নজর দিচ্ছেন না, তা রাস্তাঘাটে বেরোলেই টের পাওয়া যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকই জানাচ্ছে, আমজনতার মধ্যে টিকা নেওয়ার হার খুবই কমে গিয়েছে। গত কয়েক দিনে গড়ে গোটা দেশে তিনশোর কাছাকাছি টিকাকরণ হয়েছে। টিকা দেওয়ার হার কমে যাওয়ায় রাজ্যগুলিও কেন্দ্রের থেকে টিকা চাওয়া কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে।

যাঁরা বয়স্ক ও দীর্ঘ সময় ধরে কোনও গুরুতর রোগে ভুগছেন, তাঁদের অবশ্যই তৃতীয় (বুস্টার) ডোজ় নিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, এই গোত্রের নাগরিকদেরই করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই টিকা নিয়ে রাখা উচিত। যাঁরা বুস্টার ডোজ় নিতে চান, তাঁদের সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। সরকারি কেন্দ্রে একান্তই টিকা না পেলে বেসরকারি কেন্দ্রে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে যে টিকা পাওয়া যাচ্ছে, তা নিতে বলা হয়েছে। মাণ্ডবিয়ার কথায়, টিকা চাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির অনীহা দেখে কেন্দ্রও টিকা সংগ্রহ কমিয়ে (অনেকের মতে, থামিয়ে) দিয়েছে। কারণ টিকা নষ্ট হয়ে যাওয়ারও ভয় রয়েছে। তৃতীয় দফার টিকা নেওয়ার জন্য বিশেষ কোনও অভিযান চালানোর কথাও এখনই ভাবছে না কেন্দ্র।

মাণ্ডবিয়া অবশ্য বলছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তাঁর কথায়, দেশ জুড়ে যা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে আগামী আট থেকে দশ দিন সংক্রমণ ধাপে ধাপে বাড়বে। তার পর তা কমতে শুরু করবে। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশেরও আশা, আগামী মাসের গোড়া থেকে পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সম্প্রতি আইআইটি কানপুরের করা গাণিতিক মডেলেও মে থেকে পরিস্থিতি আবার ‘স্বাভাবিকের’ দিকে গড়ানোর কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, করোনা সংক্রমণ যে ভাবে দেশের জনগোষ্ঠীতে ছড়িয়েছে তাতে ওই রোগ আর অতিমারির পর্যায়ে নেই। তা সাধারণ জ্বর, সর্দি, ডেঙ্গির মতো স্থানীয় রোগে পরিণত হতে চলেছে। মাণ্ডবিয়াও বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু আত্মসন্তুষ্ট হতেও বারণ করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা মনে করাচ্ছেন, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করানোর মতো বিধি বিসর্জন দিলে মুহূর্তে বিপদ ধেয়ে আসতেও পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

COVID19 Death Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy