মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গ সফরে যেতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্রের মতে, এ যাত্রায় পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও বিহার সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। সামনেই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিতে রাজ্য সভাপতি নির্বাচন। সেই আবহে অমিত শাহের রাজ্য সফর তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা।
চলতি বছরের শেষে বিহারে এবং আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি সূত্রের মতে, নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতেই বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ সফরের পরিকল্পনা রয়েছে শাহের। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের দিন এনডিএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে জেতার লক্ষ্যে এনডিএ নেতৃত্বকে এক যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দেন। আগামী বছর রাজ্যে নির্বাচন হলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছেন, এখন থেকেই যাতে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতেই শাহ পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া স্থির করেছেন। রাজ্যে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই মূলত ওই সফর। তৃণমূল স্তরে দল কতটা শক্তিশালী, তা বুঝে নেওয়াই ওই সফরের লক্ষ্য।
আগামী ১০ মার্চ থেকে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হতে চলেছে। ফলে কবে অমিত শাহ রাজ্য সফরে যাচ্ছেন, তা এখনও স্থির হয়নি। বিজেপির একটি সূত্রের মতে, সম্ভবত দোল উৎসবের পরেই রাজ্যে যেতে পারেন শাহ। কারণ তত দিনে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বাছার কাজও শেষ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে নতুন রাজ্য সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করে আগামী দিনে দলের রণকৌশল কী হবে, তার রূপরেখা ঠিক করে দেওয়ার সুযোগ পাবেন শাহ। কারণ নতুন যিনি রাজ্য সভাপতি হবেন, তাঁর নেতৃত্বেই আগামী বছর বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে নামতে চলেছে বিজেপি।
প্রশ্ন হল, রাজ্য বিজেপি সভাপতি কে হতে চলেছেন? বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার গোষ্ঠীর পছন্দের প্রার্থী হলেন সাংসদ জ্যোর্তিময় মাহাতো। বিজেপির একটি সূত্রের মতে, লড়াইয়ে রয়েছেন খোদ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু শুভেন্দুর ক্ষেত্রে সমস্যা হল, তিনি আরএসএসের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠেননি। ফলে তাঁর নামে আপত্তি থাকতে পারে আরএসএসের। একটি সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের পছন্দের লোক হলেন রাজ্যসভা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু দিলীপের নামে আবার আপত্তি রয়েছে সুকান্ত-শুভেন্দু উভয় গোষ্ঠীর। এই আবহে কালো ঘোড়া হতে পারেন দলের সাংগঠনিক নেতা হিসাবে পরিচিত সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপিকে ১৮টি আসন পাইয়ে দেওয়ার অন্যতম কারিগর ছিলেন সুব্রত। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য সভাপতি পদে এমন কাউকে বসাতে চাইছেন, যাঁর সব শিবিরে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সর্বোপরি সুব্রত আরএসএস থেকেই বিজেপিতে এসেছিলেন। সূত্রের মতে, তাই সুব্রতকে সভাপতি করা হলে আরএসএসের সমর্থন পেতে সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)