ফাইল চিত্র।
চলতি মাসের শেষ দিকে সরকারি কর্মসূচিতে উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি সূত্রের খবর, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কোচবিহারের তিনবিঘায় তাঁর সফরের পরিকল্পনা দিল্লি থেকে হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য বা জেলা নেতৃত্বকে সবিস্তার কিছু এখনও জানানো হয়নি। নবান্ন সূত্রের খবর, তাদের কাছেও এ বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য নেই। শাহ যদি এপ্রিল মাসের শেষে রাজ্যে আসেন, তা হলে সেটাই হবে বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পরে তাঁর প্রথম বঙ্গ সফর। আর তাঁর সেই কর্মসূচি যদি তিনবিঘাতেই হয়, তা হলে সেটাই হবে ছিটমহল বিনিময়ের পরে প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তিনবিঘা সফর। ওই কর্মসূচিতে শাহ এলে উত্তরবঙ্গের বিজেপির সাংসদ এবং জেলা সভাপতিদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হতে পারে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “শুনেছি, কোনও সরকারি কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গে আসার কথা আছে। তবে কবে কোথায় তিনি আসবেন, তা এখনও জানি না।”
শাহর এই সম্ভাব্য সফরের কথা ছড়িয়ে পড়তেই প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক উভয় মহলেই প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ তিনি তিনবিঘায় কেন?
সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই আরএসএস-এর সীমান্ত শাখার নেতা-নেত্রীরা উত্তরবঙ্গের জেলা সংগঠনের নেতাদের ডেকে জলপাইগুড়িতে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে গরু পাচার এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই বিষয় নিয়েই সঙ্ঘের নেতারা উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তারই পরে শাহের তিনবিঘা সফরের সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। তিনবিঘা করিডর দিয়ে বাংলাদেশের যানবাহন যাতায়াত করে। সেখানে আন্তর্জাতিক সীমান্ত উন্মুক্ত। ওই এলাকায় নজদারি এবং বিধিনিষেধ বাড়ানো নিয়ে শাহের উপস্থিতিতে আলোচনা হতে পারে বলে খবর।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অনেক কর্তা অবশ্য মনে করেন, সে সব আলোচনা দিল্লিতেও হতে পারত। তা হলে শাহের তিনবিঘায় আসার পরিকল্পনার কারণ কী? গত লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি-কোচবিহারের সীমান্ত এলাকায় বিজেপি ভাল ভোট পেয়েছিল। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে সীমান্ত এলাকায় তৃণমূলের ফল ভাল হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এলাকায় অনুপ্রবেশ বেড়েছে। এই আবহে শাহের সফরের নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অঙ্ক রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
তিনবিঘা এলাকাটি বিজেপির জলপাইগুড়ি সাংগঠনিক জেলার অর্ন্তগত। দলের জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “সীমান্তে নানা প্ররোচনা তৈরি হচ্ছে। অমিত শাহ এলে আমরা অভিযোগ জানাব।” জলপাইগুড়ির জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। কেন্দ্র বার বার সুকৌশলে রাজ্যে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। আমরা নজর রাখব।”
তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষকেও চলতি মাসে পশ্চিমবঙ্গে চাইছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সুকান্ত বলেন, “নড্ডাজি এবং সন্তোষজি যে দিন সময় দেবেন, সে দিনই দলের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক হবে। ওঁরা বৈঠকে থাকবেন।” জানুয়ারি মাসেই এ রাজ্যে নড্ডার আসার কথা ছিল। কিন্তু সে বার তিনি আসেননি। বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, বিধানসভা নির্বাচন থেকে একের পর এক ভোটে পরাজয় এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দলের কর্মীদের মনোবলে ধাক্কা লেগেছে। শাহ, নড্ডা, সন্তোষ রাজ্যে এসে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক বার্তা দিলে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হতে পারে নেতৃত্বের আশা।
এ দিকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার দলে ক্ষোভ প্রশমনে এ দিন কয়েক জন নেতাকে কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজেপির রাজ্য পদাধিকারীমণ্ডলীতে অনেক পুরনো মুখ বাদ পড়ায় দলের একাংশ ক্ষুব্ধ। এ দিন বিজেপির কিছু বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী, দেবাশিস মিত্র, অম্বুজ মহান্তি, বিজয় ওঝা প্রমুখ। যাঁরা রাজ্য পদাধিকারীমণ্ডলীতে বাদ পড়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy