কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসছেন ব্রিগেডে। আসবেন আগামী ২৪ ডিসেম্বর গীতা জয়ন্তীর দিনে। শুক্রবার সেই নিশ্চয়তা মিলেছে। তবে তার আগেই আগামী ২৯ নভেম্বর কলকাতায় আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি সূত্রে খবর, শুক্রবার দিল্লিতে শাহের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। শুক্রবারই মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দিল্লি গিয়েছেন তিনি।
শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না তা স্পষ্ট না করলেও, আনন্দবাজার অনলাইনকে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছি অমিত শাহজি ধর্মতলার সভায় থাকুন। কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত মানুষদের নিয়ে আমাদের ২৯ নভেম্বরের সমাবেশ ঐতিহাসিক চেহারা নেবে। সব কিছু ঠিক থাকলে সেই সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।’’
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ রাজ্যের পাওনা টাকা দিল্লি আটকে রেখেছে অভিযোগ তুলে তৃণমূলের আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই বিজেপির এই সমাবেশ। গত অক্টোবর মাসে প্রথমে দিল্লিতে এবং পরে কলকাতায় রাজভবনের সামনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলার সময়েই এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। গত ৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনের উপস্থিতিতে সাংবাদিক বৈঠকে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল যেমন টাকা আটকে রাখার অভিযোগে সরব তেমনই বিজেপি অনেক আগে থেকেই বলে আসছে রাজ্যের বহু পরিবার কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছে রাজ্য সরকারের জন্য। তারই প্রেক্ষিতে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, ২৯ নভেম্বর কলকাতায় বঞ্চিতদের সমাবেশ করা হবে। এক লক্ষ বঞ্চিতকে আনার লক্ষ্যও জানিয়ে দেন তিনি। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিরঞ্জন উপস্থিত থাকবেন বলেও জানিয়েছিলে শুভেন্দু। এর পর থেকেই বিজেপি শিবিরে আলোচনা শোনা যাচ্ছিল যে শাহও যাতে ওই দিন উপস্থিত থাকেন সেই চেষ্টা করছে দল। অবশেষে শাহ যে আসতে পারেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত বিজেপি।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপি এই সমাবেশে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে করতে চায়। ঠিক যেখানে প্রতি বছর ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ হয় তৃণমূলের। সেই মর্মে বিজেপি আবেদনও জানিয়েছে কলকাতা পুলিশের কাছে। যদিও পুলিশের তরফে এখনও সভার অনুমোদন মেলেনি। তবে সেটা না মিললে যে তাঁরা আদালতে যাবেন তা আগেই জানিয়ে রেখেছেন সুকান্ত, শুভেন্দুরা। বিজেপির আশা, আদালত থেকে ওই জায়গায় সমাবেশের অনুমতি আদায় করা যাবে। কারণ, অতীতেও রাজ্য বিজেপি এক বার ওখানে সভা করতে চাইলে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। রাহুল সিংহ রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে শেষ পর্যন্ত আদালত থেকে অনুমোদন পায় বিজেপি।
এক দিকে তৃণমূলের অভিযোগ টাকা না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করছে রাজ্যের সঙ্গে। অন্য দিকে, অনেক পরিবারকে রাজ্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থাকে বঞ্চিত করেছে বলে অভিযোগ বিজেপির। পরস্পর বিরোধী এই দাবি নিয়ে শাসক বনাম প্রধান বিরোধী দলের লড়াই চলছিলই। দিল্লিতে অভিষেকের নেতৃত্বে আন্দোলনের ফলে তৃণমূল কিছুটা এগিয়ে ছিল। এ বার তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দিতে স্বয়ং শাহ কলকাতায় এলে দুই পক্ষের রাজনৈতিক লড়াই অন্য মাত্রা নেবে বলেই মনে করছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।
২৯ নভেম্বর ধর্মতলায় এলে অনেক দিন পরে কলকাতায় সভা হবে শাহের। গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে এখনও পর্যন্ত একটিই জনসভা করেছেন তিনি। সেটি শিলিগুড়িতে গত ১৪ এপ্রিল। মাঝে সাংগঠনিক বৈঠক বা সম্প্রতি দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে এলেও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অনেক দিন পরে কলকাতায় আসবেন শাহ। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির প্রস্তুতি সভা হয়ে উঠতে পারে। ইতিমধ্যেই ওই সভায় জমায়েত যাতে ভাল হয় তার জন্য জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজ্য বিজেপি। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ পাননি এমন পরিবারের সদস্যদের সভায় নিয়ে আসতে চায় বিজেপি। তার প্রস্তুতিও ইতিমধ্যেই শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy