চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে বিজেপির পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও কর্মসূচিকে ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি নদিয়ার শান্তিপুরে। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তিতে আহত বেশ হলেন কয়েক জন। যাঁদের মধ্যে আছেন বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়কও। বস্তুত, বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সফরের পর শুক্রবার চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় বিজেপির আন্দোলন ঘিরে সরগরম শান্তিপুর।
নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়া এলাকায় এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ফুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচি করে বিজেপি। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ। কিন্তু সময় যত গড়ায়, ততই উত্তেজনা বাড়ে। বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভেঙে ফাঁড়ির ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। সেটা প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। বিজেপির অভিযোগ, বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র অর্চনা মজুমদার-সহ রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার আহত হয়েছেন। বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে মহিলারাও আছেন। এর পরে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়। সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
আরও পড়ুন:
এই ঘটনায় বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ পুলিশকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, ‘‘পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। যে ব্যক্তি চিকিৎসককে মারধর করেছে, সেই মূল অভিযুক্তকে কেন গ্রেফতার করা হল না? আমরা সেই কারণেই পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী এবং সমর্থকদের আহত হতে হল। আমরা এর বিচার চাই।’’ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র অর্চনা অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমাকেও আঘাত পেতে হয়েছে। পুলিশের এই বর্বরতা কিছুতেই মেনে নেব না।’’
উল্লেখ্য, কালীপুজোয় চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে এক চিকিৎসকের নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই চিকিৎসকের নাম সুজন দাস। তাঁর বাড়ি নদিয়ার শান্তিপুরে। ঘটনার দিন তিনি বাইকে করে ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, ফুলিয়ার ঘোষপাড়ার কাছে একটি পুজো কমিটির লোকজন তাঁর রাস্তা আটকান। চাঁদার নামে জুলুমবাজি হয় তাঁর সঙ্গে। দাবি মতো চাঁদা না পেয়ে চিকিৎসকের বাইকের চাবি কেড়ে নেওয়ার পর তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ফুলিয়া ফাঁড়ি থেকে পুলিশকর্মীরা গিয়ে তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন।
বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় ওই চিকিৎসককে। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। পরে ওই চিকিৎসককে নদিয়ার কল্যাণীর জিএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে আহত চিকিৎসককে দেখতে আসেন শুভেন্দু।