গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সভাপতি পদ থেকে সরেছেন, কিন্তু বাংলা থেকে সরেননি অমিত শাহ। স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। বৈঠক হল সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডার বাড়িতে। কিন্তু মধ্যমণি হয়ে থাকলেন প্রাক্তন সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর বৈঠক সেরে বেরিয়ে দিলীপ জানালেন, বাংলায় দলের পরিস্থিতি এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে বিশদে জানানো হয়েছে অমিতজিকে। পুজোর আগেই অমিত শাহ বাংলায় আসছেন বলেও দিলীপ জানিয়েছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিজেপির সভাপতি পদ ছেড়েছেন অমিত শাহ। বিজেপির নীতি ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির সভাপতি পদে একসঙ্গে থাকা যাবে না। তাই মাস আটেক দুই পদ একসঙ্গে সামলানোর পরে সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ান অমিত। তাঁর জায়গা নেন নড্ডা। কিন্তু তার পরেও পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রতি বিশেষ ভাবে যত্নশীল থাকার ইচ্ছা অমিত দলের অন্দরে প্রকাশ করেছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল। বলাই বাহুল্য, দলে সে ইচ্ছায় বাধ সাধার কথা কেউই ভাবেননি। আর শত ব্যস্ততা সামলেও বাংলার দিকে দৃষ্টি বহাল রেখেছিলেন অমিত।
বঙ্গবিজয়কে যে অমিত শাহ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন এবং সেই কারণে বাংলায় দলের সাংগঠনিক কার্যকলাপ যে তিনি দেখভাল করতে চান, সে কথা এত দিন ছিল ‘প্রকাশ্য গোপনীয়তা’। সবাই জানতেন, আলোচনাও করতেন। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতেন না। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সেই গোপনীয়তার পর্দা সরিয়ে দিলেন। বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক কার্যকলাপের তত্ত্বাবধানে গত কয়েক বছরের মতো এখনও যে অমিত নিজেই রয়েছেন, তা দিলীপ স্পষ্ট করে দিলেন।
আরও পড়ুন: হাথরসের পর ভাদোহী, ফের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ যোগী-রাজ্যে
নড্ডার বাড়িতে বৈঠক শেষ হওয়ার পরে দিলীপ এ দিন বলেন, ‘‘অমিত শাহ কয়েক বছর ধরে বাংলার কাজকে বিশেষ ভাবে দেখছেন। তাঁর মাঝখানে শরীর খারাপ ছিল, তাই কথাবার্তা হতে পারেনি। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তাই তাঁর সামনে বাংলার বর্তমান পরিস্থিতিকে আমরা একবার তুলে ধরলাম।’’ সেপ্টেম্বরেও বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা দিল্লিতে টানা তিন দিন বৈঠক করেছিলেন। সাংগঠনিক কার্যকলাপ নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছিল সে বৈঠকে। বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। নির্ধারিত হয়েছিল বেশ কিছু কর্মসূচিও। সব শেষে নড্ডার সঙ্গে দেখা করে সে সব সিদ্ধান্ত বিশদে জানিয়ে আসেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতারা। কিন্তু তখনই জানা গিয়েছিল যে, অক্টোবরে বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছেন অমিতও। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সেই বৈঠকই হয়ে গেল। গত মাসে দিল্লিতে দিন তিনেকের বৈঠকে যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার নির্যাস এ দিন অমিতের সামনে তুলে ধরা হয়েছে বলে দিলীপ জানালেন। আর বললেন, ‘‘প্রস্তুতি কী ভাবে নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ অমিতজি আমাদের দিয়েছেন। সেই কাজগুলো আমরা শুরু করব।’’
আরও পড়ুন: রাহুলকে গলাধাক্কা, হাথরস ঘিরে দিনভর তপ্ত রাজনীতি, রাতে হস্তক্ষেপ ইলাহাবাদ হাইকোর্টের
নড্ডার বাসভবনে হওয়া বৈঠকে এ দিন বঙ্গ বিজেপির তরফে দিলীপ ছাড়াও ছিলেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সংগঠন সম্পাদক শিবপ্রকাশ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। ছিলেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদ থেকে সদ্য অপসারিত রাহুল সিংহও। বাংলার এবং বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এই ছয় নেতার কাছ থেকে সাংগঠনিক পরিস্থিতি অমিত বিশদে জেনেছেন বলে খবর। তার প্রেক্ষিতেই কিছু নির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তাতেই শেষ নয়। চলতি মাসেই অমিত এবং নড্ডা কলকাতায় আসছেন বলেও এ দিন স্থির হয়ে গিয়েছে।
৮ সেপ্টেম্বর নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপির যুব মোর্চা। সে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সাজ সাজ রব গোটা রাজ্যের গেরুয়া শিবিরে। আপাতত সেই কর্মসূচি সফল করার দিকে মন দিতে বলা হয়েছে রাজ্য বিজেপি-কে। ওই কর্মসূচি মেটার কয়েক দিন পরেই শাহ এবং নড্ডা কলকাতায় আসতে পারেন বলে। এই সফরে মূলত সাংগঠনিক বৈঠকই করবেন অমিতরা। প্রকাশ্য কর্মসূচি দীপাবলির পর থেকে শুরু করবেন বলে খবর। সাংগঠনিক বৈঠকের তারিখ এখনও চূড়ান্ত নয়। তবে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই শাহ এবং নড্ডা কলকাতায় এই বৈঠক করতে পারেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy