ফাইল চিত্র
সম্পর্কে ‘বাধা’ হচ্ছিল ‘প্রেমিকা’র সাড়ে তিন বছরের মেয়ে। তাই সে শিশুর শরীরে সাতটি সুচ বিঁধিয়ে তিলে তিলে মারার ফন্দি এঁটেছিল পুরুলিয়া মফস্সলের নদিয়াড়া গ্রামের সনাতন গোস্বামী (ঠাকুর)। অস্ত্রোপচারে সুচ বার করেও বাঁচানো যায়নি শিশুটিকে।
চার বছর আগের সে ঘটনায় শুক্রবার পুরুলিয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (সেকেন্ড কোর্ট) রমেশকুমার প্রধান মূল অভিযুক্ত সনাতন ও তার ‘প্রেমিকা’ তথা নিহত শিশুর মা মঙ্গলা গোস্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করলেন। সরকারি কৌঁসুলি আনোয়ার আলি আনসারি বলেন, ‘‘সনাতন ও মঙ্গলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সোমবার মামলার রায় ঘোষণা হবে।’’
২০১৭-র ১১ জুলাই জ্বর ও সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে মেয়েকে মঙ্গলা পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। শিশুর দেহে একাধিক ক্ষত, আঁচড় এবং নিম্নাঙ্গে রক্তের দাগ দেখে ডাক্তারদের সন্দেহ হয়। কিন্তু মঙ্গলার কাছে সদুত্তর মেলেনি। ক্ষতের কারণ জানতে ‘মেডিক্যাল বোর্ড’ গড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক্স-রে-তে ধরা পড়ে, শিশুটির শরীরে সাতটি সুচ বিঁধে রয়েছে। পুলিশ ও ‘চাইল্ডলাইন’-কে জানানো হয়। তাদের কাছে মঙ্গলা দাবি করে, সে প্রাক্তন হোমগার্ড সনাতনের বাড়ির পরিচারিকা। সনাতনই তাঁর মেয়ের উপরে ‘নির্যাতন’ চালিয়েছে।
কলকাতার এসএসকেএম-এ ১৮ জুলাই অস্ত্রোপচার করে বুক-পেট থেকে সুচগুলি বার করা হলেও বাঁচানো যায়নি শিশুটিকে। ২১ জুলাই সে মারা যায়। ‘চাইল্ডলাইন’-এর অভিযোগের ভিত্তিতে সনাতনকে সহায়তা করার অভিযোগে মঙ্গলা গ্রেফতার হয়। সনাতন পালিয়েছিল। ২৯ জুলাই উত্তরপ্রদেশের শোনভদ্র জেলার রেণুকোট থেকে পুলিশ তাকে ধরে। ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
সরকারি কৌঁসুলি জানান, বিপত্নীক, ষাটোর্ধ্ব সনাতনের দুই ছেলে ও পুত্রবধূরা অন্যত্র থাকতেন। স্বামী-বিচ্ছিন্না মধ্য ত্রিশের মঙ্গলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় কীর্তনিয়া হিসেবে এলাকায় পরিচিত সনাতন। কিন্তু ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়ানোয় মঙ্গলার সন্তান বাধা হচ্ছিল। তাই তাকে মারার ছক কষা হয়। কিন্তু হঠাৎ সনাতনের পুত্রবধূরা বাড়িতে এসে শিশুটিকে অসুস্থ দেখে, হাসপাতালে ভর্তির জন্য জোরাজোরি করাতেই ঘটনা প্রকাশ পায়। আদালতে এ দিন সনাতন দৃশ্যত নির্বিকার ছিল। ছলছল চোখে এজলাস ছাড়ে মঙ্গলা। কেউ মন্তব্য করেনি। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী শেখর বসু বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা থাকলেও, তা প্রমাণিত হয়নি।’’ সনাতনের বড় ছেলে জিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, ‘‘বাবা দোষ করেছিল। শাস্তি প্রত্যাশিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy