সুনসান খোসবাগান। —নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে বদলে গেল পাড়াটাই। অন্য দিন বর্ধমান শহরের খোসবাগানের রাস্তায় কার্যত হাঁটা যায় না। নার্সিংহোম, ‘প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি’, ওষুধের দোকানে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের ভিড় এবং অ্যাম্বুল্যান্সের দাপটে যানজট এখানে অবশ্যম্ভাবী। নাজেহাল হওয়াটাই ভবিতব্য পথচারীর। বুধবার অবশ্য বর্ধমান শহরের ‘হার্লি স্ট্রিট’ দিয়ে বড় গাড়িও পেরলো অনায়াসে।
কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে ইন্টার্নদের মারধর করার প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন স্থানীয় ডাক্তারেরা। প্রায় প্রত্যেকেই ‘চেম্বার’ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিভিন্ন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষেরও দাবি, চিকিৎসক মিলবে কি না, সেই সংশয়ে নতুন করে রোগী ভর্তি করা হয়নি। প্রভাব পড়েছে ওষুধ-ব্যবসাতেও।
এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ চিকিৎসক মিলিয়ে প্রায় চার হাজার ‘চেম্বার’ রয়েছে এ পাড়ায়। এ ছাড়া, প্রায় ২৫টি সংস্থায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বসেন। খোসবাগানের প্রবীণ বাসিন্দা আভাস ভট্টাচার্যের দাবি, “ওই সব চেম্বারে তিনটে ‘শিফট’-এ অন্তত দেড় লক্ষ রোগী প্রতিদিন আসেন। সঙ্গে পরিজনেরা। এ ছাড়া, নার্সিংহোম, প্যাথলজি-ওষুধের দোকানে আরও ৫০ হাজার লোক আসেন। সেখানে এ দিন সব ফাঁকা।’’ ‘বেঙ্গল কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর বর্ধমান শহরের সভাপতি অসিত রায়েরও বক্তব্য, “ডাক্তারেরা বসেননি বলে খোসবাগান এলাকায় ওষুধ ব্যবসায়ীদের এ দিন ৭০ শতাংশেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে।’’
খোসবাগান ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ ‘চেম্বার’-এ তালা। কেউ কেউ লিখে দিয়েছেন, এনআরএস-কাণ্ডের জন্যে ডাক্তার বসবেন না। এলাকায় ‘চেম্বার’ রয়েছে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, সৌমেন সাহা শিকদারের। এনআরএসের এই প্রাক্তন ছাত্রের কথায়, ‘‘চেম্বার না খোলাটা আমাদের নীরব প্রতিবাদ।’’ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অশোক দত্তের দাবি, “চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চের আবেদনে বহির্বিভাগ বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। আমাদের চেম্বারগুলোও এক রকম বহির্বিভাগ। সে জন্যে চেম্বার খুলিনি।’’
খোসবাগানে ডাক্তার না থাকায় এ দিন ভোগান্তি হয় রোগীদের। বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের সুনীত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মাথার ব্যথায় ভুগছি। বহু নাম লিখিয়েছিলাম। এসে দেখলাম, চেম্বার বন্ধ।’’ বর্ধমান মেডিক্যালে বহির্বিভাগ বন্ধ দেখে খোসবাগানে ডাক্তার দেখানোর কথা ভেবেছিলেন হুগলির আরামবাগের সীমা রায়। তাঁর ক্ষোভ, “এ ভাবে সাধারণ মানুষের উপরে রাগ দেখিয়ে ডাক্তারদের কী লাভ?” দুর্গাপুর থেকে প্রতি সপ্তাহ তিনেকে খোসবাগানে স্ত্রীকে দেখাতে আসেন অমরনাথ কুণ্ডু। তাঁর মত, ‘‘ডাক্তারদের উপরে হামলা মানা যায় না। তা বলে ডাক্তারদের রোগী না-দেখাও সমর্থন করি না।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy