ফাইল চিত্র।
বার বার নানা গুরুতর অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও কেন পার পেয়ে যান নির্মল মাজি? প্রশ্ন তুললে চিকিৎসক মহলের যে কারও বাঁধা উত্তর, ‘‘কেন আবার? ক্ষমতার কাছাকাছি আছেন, তাই।’’
এসএসকেএম হাসপাতালে কুকুরের ডায়ালিসিস করানোর চেষ্টা থেকে শুরু করে ছেলের এমবিবিএস পরীক্ষার সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে রাখা, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া, বিভিন্ন হাসপাতালে সুপারদের তাঁর কথা শুনে চলতে বাধ্য করা, কথা না শুনলে গালিগালাজ—এমন একাধিক অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এও-অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করাই তাঁর ‘স্বভাব’, ‘দাপটের ছড়ি’ও। সম্প্রতি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে জীবনদায়ী ওষুধ কেলেঙ্কারিতেও জড়িয়েছে তাঁর নাম। কিন্তু কোনও বারই নির্মলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, যথাযথ তদন্তের ব্যবস্থাও করেনি স্বাস্থ্য দফতর। বরং নির্মল-প্রসঙ্গ উঠলে সকলেই তড়িঘড়ি মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বৃহস্পতিবার পাশ-ফেল বিতর্ককে ঘিরেও যখন স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক কর্তাকে প্রশ্ন করা হয়েছে, তখনও তাঁরা ‘কিছু জানি না’ বলে ফোন রেখে দিয়েছেন।
নির্মল মাজির বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চাই, সে কথা লিখিত ভাবে জানানো হলেও উত্তর দেননি রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বা স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। দেবাশিস যখন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের পদে ছিলেন, তখন নির্মল মাজি তাঁকে ফোন করে গালিগালাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগেরও কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। নির্মল নিজে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
চিকিৎসক-বিধায়ক নির্মল মাজি বর্তমানে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি। চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের কলকাতা শাখারও সভাপতি। তৃণমূলের আর এক চিকিৎসক নেতা, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের সঙ্গে নির্মল মাজির ‘মধুর’ সম্পর্কের বিষয়টিও সকলেরই জানা। এ দিন যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে শান্তনু ফোন ধরেননি, মেসেজেরও উত্তর দেননি।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ নির্মলের ‘দুর্গ’ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি সেখানে তাঁর জনপ্রিয়তা কমছে। দিন কয়েক আগে হাসপাতালে তাঁর জন্মদিন পালনের ব্যবস্থা হলেও জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভের জেরে তা ভেস্তে যায়। কিন্তু কোভিড কালে কেন একটি হাসপাতালে জন্মদিনের উৎসবের আয়োজন হবে এবং কেন নির্মল তাতে উপস্থিত থাকার জন্য হাসপাতালে আসবেন, সে বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই ঘটনাগুলো তাতে বার বার চোনা ফেলছে। এগুলো বন্ধ না হলে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য দফতরের আমলা- দুই মহলের কাছেই জনপ্রিয়তা ও ভরসা হারাবে সরকার।’’
তবে নির্মল সমস্ত অভিযোগকেই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। কেন তাঁর বিরুদ্ধেই বার বার এত অভিযোগ ওঠে? নির্মলের উত্তর, ‘‘সবটাই হিংসা। দলের মধ্যেও অনেকে আমাকে হিংসা করে। তাই এ সব করছে। কিন্তু আমার নেত্রী আমাকে ভাল ভাবেই চেনেন। তাই তিনি এ সব বিশ্বাস করেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy