প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে টালবাহানা করলে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে বলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মধ্যমগ্রামে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি সে কথা বলার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এ ধরনের অভিযোগ উঠল কলকাতার একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে বুধবার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার যে ব্যক্তির মৃত্যুতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ উঠেছে, তিনিও উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমারই বাসিন্দা।
হিঙ্গলগঞ্জের স্বরূপকাটির মধুসূদন মণ্ডলের (৭২) ছেলে ইন্দ্রজিৎ জানান, ৮ নভেম্বর বাবা অসুস্থ হয়েছিলেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির পরামর্শে ওই দিনই তাঁকে ভর্তি করা হয় মানিকতলার একটি নার্সিংহোম। কয়েক দিনে ৩৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ইন্দ্রজিতের পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে। তবে ওই নার্সিংহোমে তা নেওয়া হয় কি না, তা আগে জানতেন না বলে দাবি ইন্দ্রজিতের। পরে তিনি কার্ড জমাও দেন। কিন্তু তাঁর দাবি, কার্ড নিতে শুরু থেকেই নানা ওজর-আপত্তি তুলছিলেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
ইন্দ্রজিৎ জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ২টো নাগাদ নার্সিংহোম থেকে ফোনে জানানো হয়, মারা গিয়েছেন মধুসূদন। বিল বাবদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার হিসেবও দেন কর্তৃপক্ষ। ইন্দ্রজিতের দাবি, তাঁর আর্থিক অসঙ্গতির কথা জানতে পেরে ‘দয়াপরবশ’ হয়ে ৮০ হাজার টাকা দিতে বলে নার্সিংহোম।
ইন্দ্রজিৎ জানান, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে তো টাকা লাগার কথা নয়। সে কথা অবশ্য কর্তৃপক্ষ মানতে চাননি বলে দাবি তাঁর। অভিযোগ, নগদেই বকেয়া মেটানোর জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবই আটকে রাখা হয়। টাকা না মেটালে দেহ ছাড়া হবে না বলা হয় বলে দাবি ইন্দ্রজিতের।
সমস্যার কথা হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ীকে জানান তিনি। বিডিও ফোন করেন নার্সিংহোমে। পরে তিনি জানান, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দ্রুত দেহ ছেড়ে দেওয়া হবে। এর পরে বিকেলের দিকে তাঁর ব্যাঙ্কের কাগজপত্র ফেরত দিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান ইন্দ্রজিৎ। কিন্তু দেহ ছাড়া হয়নি।
নার্সিংহোমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, এক ব্যক্তি জানান, দেহ আটকে রাখার প্রশ্নই নেই। মৃত্যুর পরে চার ঘণ্টা পর্যন্ত দেখে তার পরেই মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়। সে কারণে একটু দেরি হচ্ছে। কিন্তু দুপুর দুটো-আড়াইটে নাগাদ মৃত্যুর খবর এলেও রাত ৮টার পরেও কেন দেহ ছাড়া হচ্ছে না, সে প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। কর্তৃপক্ষ জানান, ওষুধের খরচ বাবদ ৩৭ হাজার টাকা অন্তত মিটিয়ে দিলে ভাল হয়। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে তো সেটুকুও লাগার কথা নয়। স্পষ্ট উত্তর দেননি ফোনের ও প্রান্তের ব্যক্তি।
ইন্দ্রজিৎ জানান, তাঁকে ডেকে পরে জানতে চাওয়া হয়, তিনি শেষমেশ কত টাকা দিতে পারবেন। বাবার অসুস্থতার পরে নিজের ছোট ব্যবসা বন্ধক রেখে সামান্য টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি। জানান, মেরেকেটে হাজার দশেক টাকা দিতে পারেন।
রাত ৯টা পর্যন্ত বাবার দেহ নার্সিংহোমের বাইরে আনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রজিৎ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy