Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

এনআরসি: বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা

অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিল অন্য সব দল।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৫:৩৬
Share: Save:

অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিল অন্য সব দল। আর বিধানসভার বাইরে বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ফের হুঙ্কার দিলেন, ‘‘বাংলাদেশিদের গলা ধাক্কা দেওয়ার যে কথা বলেছিলাম, আমি এবং আমার দল আবার সেই কথাই বলছি।’’

এনআরসি-কাণ্ডের প্রতিবাদে সর্বদলীয় প্রস্তাবকে সমর্থন করলেও বামেরা অবশ্য সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, অসমের ১ লক্ষ ১১ হাজার ৪৮২ জনের নথির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রাজ্য সরকারকে পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য সরকার তার মধ্যে মাত্র ৫৮৫২ জনের নথি যাচাই করল কেন? বাকিদের নথি কেন যাচাই করল না? তাঁর এই প্রশ্নের সময় অরূপ বিশ্বাস-সহ তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়করা হইহই করে প্রতিবাদ করেন।

অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়ায় প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার প্রতিবাদে সর্বদলীয় প্রস্তাবকে সমর্থন করে মঙ্গলবার বিধানসভায় মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মূলত তিনটি অভিযোগ করেন। এক, যে ৪০ লক্ষ মানুষকে এখন এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হল, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তাঁদের ভোটার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। দুই, সুপ্রিম কোর্ট এনআরসি তৈরি করতে বললেও তার পদ্ধতি বলে দেয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে বিজেপি নিজেদের ইচ্ছামতো প্রক্রিয়ায় এত মানুষকে নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ দিয়েছে। তিন, তথ্যের অধিকার আইনের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে এনআরসি-কে। যাতে মানুষ ওই পঞ্জি বিষয়ে কিছু জানতে না পারে।

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘এর পর বাংলা এবং বাঙালি বিরোধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে এলে বাংলা বন্‌ধ ডাকতে হবে।’’

এনআরসি প্রসঙ্গে সুজনবাবু বিজেপিকে বাংলা এবং বাঙালি বিরোধী বলে অভিহিত করে। তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এখন নাগরিকত্ব বিল থেকে পালাতে চাইছে কেন?’’ এখন বিজেপি-র ‘গলা ধাক্কা’র রাজনীতির বিরোধিতা করলেও ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৎকালীন যুব কংগ্রেস যে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার জন্যই সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল, সে কথাও এ দিন বিধানসভায় তোলেন সুজনবাবু। শাসক পক্ষ অবশ্য চিৎকার করে তার বিরোধিতা করে।

বিজেপি ওই আলোচনায় অংশই নেয়নি! তাদের তিন বিধায়কের মধ্যে শুধু মনোজ টিগ্গা ওই সময় সভায় চুপ করে বসে থেকেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, দিলীপবাবুরা এনআরসি-আলোচনায় অংশ না নেওয়ায় বিজেপি-র একাংশও সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। তাঁরা বিধানসভায় নিজেদের বক্তব্য রেকর্ড করালেন না কেন? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘কীসের রেকর্ড? আমরা জনগণের কাছে আমাদের কথা বলি। তৃণমূলের মানুষের কাছে জায়গা নেই বলে ওরা বন্ধ ঘরে রেকর্ড করায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Assam Assam NRC Final Draft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE