প্রবেশ নিষেধ: উত্তর কলকাতার একটি পুজো মণ্ডপে। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে পুজো মণ্ডপে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড, নির্দিষ্ট দূরত্বে গার্ডরেল-ব্যারিকেডের ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু গার্ডরেলের বাইরে ভিড় হলে কী ভাবে সামলানো হবে, তা নিয়ে চিন্তিত পুলিশকর্তারা। কারণ, অনেক বেশি মানুষ এক জায়গায় জড়ো হলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে ঠিকই, কিন্তু সেই ভিড় সরাতে বল প্রয়োগ করা সম্ভব হবে না। ফলে পুলিশের সামনে এখন কার্যত উভয়সঙ্কট।
এই অবস্থায় পুজোয় ভিড় রুখতে অতিরিক্ত বাহিনী নামাচ্ছে মালদহের মতো জেলা। ড্রোনেও নজরদারি চলবে। ভিড় সামলাতে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি কোচবিহারের পুলিশ সুপার সনা আখতারের। অন্য দিকে, আদালতের নির্দেশ মেনে চলা হবে— এই মর্মে প্রতিটি পুজো কমিটিকে মুচলেকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে হাওড়া ও হুগলির পুলিশ।
অর্থাৎ সব নজর সেই আদালতের দিকেই। ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি পুজো নিয়ে সোমবারের রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে হাইকোর্টে যে-আবেদন করেছে, আজ, বুধবার তার শুনানি হওয়ার কথা। প্রশাসনের অন্দরের খবর, নজর সেই মামলার দিকেই। বিঘ্নহীন পুজোর আয়োজনে কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাইছে না নবান্ন। “আমরা অধীর আগ্রহে আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। রায় জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। প্রশাসনিক প্রস্তুতিতে কোনও রকম ফাঁক রাখা হবে না,” মঙ্গলবার বলেন প্রশাসনের এক কর্তা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে করোনা সংক্রমণ ৪ হাজার ছাড়াল, এই প্রথম
আরও পড়ুন: সকলকে মাস্ক পরতে বাধ্য করুন: মমতা
এ-পর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী বড় পুজোগুলির মণ্ডপ সংলগ্ন এলাকায় অন্যান্য বারের চেয়ে বেশি পুলিশ থাকবে। যেমন, বাবুবাগানে ৪৭, দেশপ্রিয় পার্কে ৩১, ত্রিধারায় ৫৩, সুরুচি সঙ্ঘে ৪২, চেতলা অগ্রণীতে ৬৩ জন পুলিশ অফিসার-কর্মী ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন। ছোট পুজোগুলিতে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তিন জন এবং সন্ধ্যা ৭টার পরে চার জন পুলিশকর্মী থাকবেন মণ্ডপের ভিতরে। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, আদালতের রায় জেনে প্রয়োজন অনুযায়ী বাকি বন্দোবস্ত করা হবে। একই ভাবে জেলা প্রশাসনগুলিকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠাবে নবান্ন। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, কোভিড সুরক্ষা বিধি মানার প্রশ্নে প্রথম থেকেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। সবিস্তার বিধি প্রকাশ করে অনেক আগেই সচেতন করে দেওয়া হয়েছে পুজো কমিটিগুলিকে।
উচ্চ আদালতের রায়ের বিষয়ে লালবাজারের তরফে এ দিন পর্যন্ত থানাগুলিকে চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি। তবে হাইকোর্টের সোমবারের নির্দেশ অনুযায়ী কিছু পুজো কমিটি নিজেরাই মণ্ডপে দর্শকের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। পূর্ব মেদিনীপুরে শুধু পুজোর ভিড় সামলানোর জন্য ২৫০ জন অস্থায়ী হোমগার্ড নিয়োগ করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে বড় বড় পুজোর সামনে রাস্তার মোড়ে ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারেরা থাকবেন। বাঁকুড়ায় বড় পুজোর মণ্ডপে ভিড় নিয়ন্ত্রণে বাড়তি পুলিশ ও সিভিক-কর্মী মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কোর্টের নির্দেশ মেনে চলার জন্য পশ্চিম বর্ধমানে এ দিন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে পুজোর উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেয় পুলিশ।
কিন্তু পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশিকা আসেনি। যে-নির্দেশিকা আসবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে।’’ একই বক্তব্য শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্বের। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা জানাতে পারেনি নদিয়া এবং দুই ২৪ পরগনার পুলিশ-প্রশাসন। তবে পুজো দেখার গাইড-ম্যাপ প্রকাশ করেছে বারুইপুর পুলিশ-জেলা। এতে জনতা বাড়তি উৎসাহিত হবে কি না, সেই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘এটা প্রতি বছরই হয়। এ বছরেও হল।’’
বেশ কিছু পুজো কমিটির বক্তব্য, টাকা খরচ করে ব্যারিকেড বসানো, জায়ান্ট স্ক্রিন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজো দেখানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পূর্ব বর্ধমানের মতো কিছু জেলা প্রশাসন অবশ্য এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। তারা রাজ্য সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy