আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। অথচ অভিযুক্ত রয়েছে জেলে! তাকে যে হাজির করানো হচ্ছে না, আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের কর্তৃপক্ষ সে-কথা এমনকী আদালতকেও জানাননি।
শুক্রবার খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় এই ঘটনার কথা জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক তথা এনআইএ আদালতের বিচারক কুন্দনকুমার কুমাই। আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সুপারকে তিনি ‘শো-কজ’ বা কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
অভিযুক্ত গরহাজির থাকায় এ দিন আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। যদিও এ দিনের সাক্ষী, চিকিৎসক অচিন্ত্য বিশ্বাস সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী মহম্মদ আবু সেলিম ও ফজলে আহমেদ খান বলেন, ‘‘হাবিবুর রহমান নামে এক অভিযুক্তকে এ দিন জেল থেকে আদালতে
পাঠানোই হয়নি। তাকে না-পাঠানো এবং সেই তথ্য আদালতকে না-জানানোয় জেল সুপারকে শো-কজ করা হয়েছে।’’
আদালত সূত্রের খবর, এজলাসে তখন অভিযুক্তদের নাম ধরে এক-এক করে ডাকা হচ্ছিল। হাবিবুরের নাম ধরে একাধিক বার ডাকলেও সাড়া মেলেনি। হাবিবুরকে যে হাজিরই করানো হয়নি, কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অন্য অভিযুক্তদের জিজ্ঞেস করে তা জানতে পারেন বিচারক।
আলিপুর জেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সঙ্গত কারণেই হাবিবুরকে এ দিন আদালতে হাজির করানো হয়নি। আদালতকে সে-কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। জেল সূত্রের খবর, অসুস্থ হাবিবুরকে জেলের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্সে করেও তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে হাসপাতালের চিকিৎসক জেল-কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন। তা সত্ত্বেও হাবিবুরকে যথাসম্ভব সুস্থ করে পরে শেষ মুহূর্তে পাঠানোর চেষ্টা চলছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, সেটা ঝুঁকির হয়ে যাবে। তাই হাবিবুরকে শেষ পর্যন্ত কাঠগড়ায় তোলা হয়নি এবং সময়মতো সেটা আদালতকে জানানোও যায়নি।
আদালত সূত্রেও জানা গিয়েছে, হাবিবুর অসুস্থ। জেলে উপযুক্ত চিকিৎসা মিলছে না বলে অভিযোগ তুলে সে কয়েক দিন অনশন করছিল। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনিতেই সে ব্লাড সুগারের রোগী।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর এলাকার উপরডিহা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুরকে ২০১৫-র জানুয়ারিতে গ্রেফতার করা হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, হাবিবুর জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র সদস্য। সে জঙ্গি ডেরা লালগোলার মকিমনগর মাদ্রাসায় রান্না করত এবং তার এক মেয়ে জেএমবি-র জঙ্গি প্রশিক্ষণের ঘাঁটি বলে চিহ্নিত বর্ধমানের শিমুলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল।
সোমবার খাগড়াগড় মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার কথা সুনীল ডোমের। এ দিনের সাক্ষী, চিকিৎসক অচিন্ত্য বিশ্বাসের সাক্ষ্য পরে নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy