সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
সন্দীপ ঘোষ-সহ চার জনকে সশরীরে আদালতে হাজির করাতে হবে, এমনই জানালেন আলিপুরের সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক। সন্দীপদের নিজ়াম প্যালেস থেকে ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে হাজির করানোর আবেদন জানানো হয়েছিল সিবিআইয়ের তরফে। সূত্রের খবর, প্রথমে মৌখিক ভাবে এবং পরে লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর যখন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে আদালতে হাজির করেছিল সিবিআই, তখন আদালতের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সন্দীপকে আদালত থেকে বার করার সময়েই শুরু হয় গোলমাল। ‘চোর চোর’ চিৎকার করে একদল মানুষ সন্দীপের দিকে এগিয়ে যায়। লেগে যায় হুড়োহুড়ি। সেই সময়েই কোনও এক জন সন্দীপের মাথায় পিছন থেকে চাঁটি মারেন বলেও অভিযোগ। সেই পরিস্থিতি থেকে কোনও রকমে সন্দীপকে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে গাড়িতে তোলেন সিবিআই আধিকারিকেরা।
সে দিনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই সন্দীপদের ‘ভার্চুয়াল’ শুনানির আবেদন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দিল আলিপুর আদালত। সূত্রের খবর, বিচারক সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দেননি। তিনি স্পষ্ট জানান, ধৃতদের সশরীরেই আদালতে হাজির করাতে হবে। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে থেকে ৩টের মধ্যে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালত চত্বরে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, তা দেখতে হবে পুলিশকে। সিবিআই পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করবে। আদালতের নির্দেশের পরই আদালত চত্বরে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। গার্ডরেল বসানোর কাজ শুরু করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকেই সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর পরে তিনি নিজে থেকে ইস্তফা দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। কিন্তু সেখানে তিনি ঢুকতে পারেননি পড়ুয়াদের ক্ষোভে। শেষে নিয়োগপত্র ফিরিয়ে নিতে হয় রাজ্য সরকারকে। এর পরে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গেলে ১৬ দিন জেরা করা হয় সন্দীপকে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিবিআই। সেই মামলাতেই সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয় ২ সেপ্টেম্বর। শুধু সন্দীপ একা নন, এই মামলায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ধৃতদের নাম সুমন হাজরা, বিপ্লব সিংহ এবং আফসর আলি। এঁদের মধ্যে আফসর সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। বিপ্লব ওষুধের সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সুমন ছিলেন একটি ওষুধের দোকানের মালিক। অভিযোগ, ধৃত তিন জনকে বেআইনি ভাবে হাসপাতালে ক্যাফেটেরিয়া, পার্কিং লট-সহ নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ। আট দিন সিবিআই হেফাজত শেষে মঙ্গলবার তাঁদের চার জনকে আদালতে হাজির করানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy