Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Akhil Giri

দলের নির্দেশে পদত্যাগ করছেন ঠিকই, কিন্তু ‘ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই’! স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অখিল গিরি

তৃণমূল অখিলকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার। একই সঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী অখিলকে জানিয়ে দেন, যে মহিলাকে তিনি অপমান করেছেন, তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

গ্রাফিক— সনৎ সিংহ

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ১৬:৩৯
Share: Save:

দলের নির্দেশে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও তাঁর কৃতকর্মের জন্য ‘অনুতপ্ত’ নন অখিল গিরি। রবিবার দুপুরে কাঁথিতে বসে একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে দিলেন, তিনি বন দফতরের ওই মহিলা অফিসারের কাছে এখনও পর্যন্ত ক্ষমা চাননি এবং ভবিষ্যতে চাইবেনও না। ক্ষমা চাওয়ার কথা জানতে চাওয়া হলে অখিল বলেন, ‘‘আমি কোনও সরকারি অধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাই না। আমার রাজনৈতিক জীবনে কোনও আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাইনি। আর ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’’ যদিও অখিলের এই বক্তব্যের পাল্টা তৃণমূলও স্পষ্ট করে দিয়েছে অখিলকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতেই হবে। কারণ কোনও সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণকে দল প্রশ্রয় দেয় না।

শনিবারই এক মহিলা বন আধিকারিকের সঙ্গে অখিলের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। তাতে রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিলকে ওই মহিলা বন আধিকারিকের উদ্দেশে কুকথা বলতে শোনা যায়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দল থেকে অখিলের কাছে নির্দেশ আসে মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার। একই সঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী অখিলকে জানিয়ে দেন, যে মহিলাকে তিনি অপমান করেছেন, তার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। রবিবার দলের রাজ্য সভাপতির সেই বার্তা পাওয়ার পরেই কাঁথিতে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন অখিল। তিনি বলেন, ‘‘দল মনে করেছে আমার কাজে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাই আমার কাছে নির্দেশ এসেছে পদত্যাগ করার। আমি দলের অনুগত কর্মী। তাই দল যে নির্দেশ দিয়েছে, তা পালন করব। পদত্যাগপত্র লেখা আমার হয়ে গিয়েছে। আজ ইমেল করে দেব। কাল গিয়ে হাতে চিঠিটি জমা দিয়ে আসব।’’ তবে দলের একটি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেও অন্য নির্দেশটি মানবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অখিল।

রবিবার তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমরা উত্তেজনার বশে অনেক কথাই উচ্চারণ করে ফেলি। পরে মনে হয় সেগুলো না বললেই ভাল হত। কিন্তু কথা তো আর ফেরানো যায় না। তাই সেই হিসাবে যদি ভুল হয়, তবে আমার ভুল।’’ যদিও তিনি যা করেছেন, তার জন্য তিনি অনুতপ্ত নন বলেই বুঝিয়ে দিয়েছেন অখিল। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দলের প্রতিনিধিদের সংযত হতে বলেছিলেন মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কি সেই সংযমের অভাবেই দলের শাস্তির খাঁড়া নামল তাঁর উপরে। জবাবে অখিল জানান, দল তাঁদের মানবিকও হতে বলেছে, তিনি যা করতে গিয়েছিলেন, তা মানবিকতার খাতিরেই।

রবিবার সকালেও বন দফতরের মহিলা আধিকারিকের উদ্দেশে বলা তাঁর ‘কুকথা’র জন্য কেবল দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন অখিল। ক্ষমা চাননি। রবিবার দুপুরে তিনি ‘ভুল’ হয়েছে বলে স্বীকার করে নিলেও জানিয়ে দিলেন, ক্ষমা চাইবেন না।

অখিলের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন ‘‘একজন সরকারি আধিকারিককে খারাপ কথা বল দল অনুমোদন করে না। ঘটনাটা খুবই খারাপ হয়েছে, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী তাঁকে নিঃর্শত ক্ষমা চাইতে বলেছেন। এটা দলের সার্বিক সিদ্ধান্ত। তাই শুধুমাত্র পদত্যাগ করলেই হবে না তাঁকে নিঃর্শত ক্ষমা চাইতে হবে। দলের নেতা-কর্মীদের সংযত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেনও বলেন, ‘‘দল সর্বসম্মতিক্রমে কিছু নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ পালন করবেন কি করবেন না সেটা ওঁর (অখিলের) ব্যাপার। তবে উনি যা করবেন তার ভিত্তিতে দলের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারিত হবে। সেই পদক্ষেপ কী? তা সিদ্ধান্ত হলেই জানা যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Akhil Giri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy