বাগুইআটিতে দুই পড়ুয়া খুনের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি
দুই মাধ্যমিক পড়়ুয়া নিখোঁজ এবং খুনের ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বাগুইআটি থানার আইসি কল্লোল ঘোষকে বুধবার সাসপেন্ড করা হয়েছে। বাগুইআটি থানার নতুন আইসি হিসাবে পাঠানো হল বিধাননগরে কমিশনারেটের আওতায় এয়ারপোর্ট থানার আইসি শান্তনু সরকারকে। বুধবারই ভবানীভবন থেকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কাছে ওই বদলির চিঠি পাঠানো হয়।
দুই পড়ুয়া খুনের ঘটনায় গোড়া থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের তরফে দুই ছাত্রের নিখোঁজের বিষয়টি জানানোর পরেও কেন পদক্ষেপ করল না পুলিশ, সেই প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তাই নয়, মুক্তিপণ চেয়ে এসএমএসের কথা জানিয়ে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেও তদন্তে গড়িমসি কেন, এই প্রশ্নও তুলেছে নিহতদের পরিবার। সূত্রের খবর, নবান্নে একটি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুলিশের ‘দায়সারা মনোভাব’ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়ের সামনেই বুধবার তিনি বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকারকে ভর্ৎসনা করেছেন। নবান্ন সূত্রের দাবি, সুপ্রতিমকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন সিআইডির মিসিং স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হল না?’’ বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে তিনি স্পষ্ট বলেন, ওই ঘটনার তদন্তে ‘‘অবহেলা হয়েছে।’’ মমতার প্রশ্ন, ‘‘সমন্বয় নেই কেন? কেন এত দায়সারা মনোভাব?’’
পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে শোরগোলের আবহেই সাসপেন্ড করা হয় আইসি কল্লোলকে। বিকেলে দিকে বাগুইআটি গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কথাও বলেছেন বিধাননগরের সিপি। পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মূলত বাগুইআটির থানার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল নিহতদের পরিবার। সেই কারণেই প্রাথমিক ভাবে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল তাঁদের পক্ষ থেকে। কিন্তু তদন্তভার এখন সিআইডির হাতে যাওয়ায় তাতে ভরসা রাখা হচ্ছে বলেই খবর পরিবার সূত্রে।
বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর। পুলিশ সূত্রে খবর, দুই স্কুল পড়ুয়া নিখোঁজ হয় গত ২২ অগস্ট। দু’দিন তাদের কোনও খোঁজ না পেয়ে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। পরিবারের অভিযোগ ছিল, দু’জনকেই অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অতনুর বাবা অভিযোগ করেন, তিনি মুক্তিপণ চেয়ে ‘মেসেজ’ পেয়েছিলেন। অপহরণকারীরা বার বার মুক্তিপণের অঙ্ক বদলায় বলেও অভিযোগ। এর প্রায় ১৩ দিন পর মঙ্গলবার বসিরহাট পুলিশ জেলা থেকে উদ্ধার হয় অতনু এবং অভিষেকের দেহ। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে সত্যেন্দ্র চৌধুরি নামে এক ব্যক্তি ওই দু’জনকে খুন করেছে। অতনুর পরিবারের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক ওই সত্যেন্দ্রর। পুলিশ ওই কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র। অতনু ও অভিষেকের পরিবারের এখন দাবি, তাঁকে দ্রুত খুঁজে বার করে শাস্তি দিতে হবে। সিপির তরফেও সঠিক তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy