প্রতীকী ছবি।
বামেদের সঙ্গে জোট গড়তে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই গত বছর ২৪ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোটের ঘোষণা করেছিল এআইসিসি। কিন্তু জোট ঘোষণা হয়ে গেলেও আসন রফার বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে। সূত্রের খবর, দিল্লির কংগ্রেস নেতারা খবর নিয়ে জেনেছেন, জোটের বৈঠক হলেও আসন রফার আলোচনাই এখনও শুরুই করা যায়নি। তাঁরা আরও জেনেছেন, কংগ্রেসের একাংশের অনীহাতেই আসন সমঝোতার বিষয়টি আটকে রয়েছে। অথচ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহেই বাংলায় ভোটের বাদ্যি বেজে যাবে। তাই এ বার আর কোনও কালবিলম্ব না করে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে চলেছে এআইসিসি।
আগামী ১৫ জানুয়ারি কলকাতায় আসছেন এআইসিসি-র তিন নেতা। পশ্চিমবঙ্গের ভোটের জন্য কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা বিকে হরিপ্রসাদ, আলমগির আলম ও বিজয় ইন্দর সিংলাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই এসে জোট সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যার সমাধান করে দিল্লি নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
জোট আলোচনার জন্য এআইসিসি-র কমিটি ঘোষণার পর আসন রফা করতে দু’টি বৈঠক হয়ে গিয়েছে বাম-কংগ্রেসের। বৈঠকে কংগ্রেসের পক্ষে রাজ্যসভার প্রবীণ সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান যোগ দিলেও গরহাজির ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাই বৈঠকে যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা হলেও, আসন সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে কোনও কথাই হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে প্রদীপ-মান্নানকে দিল্লিতে তলব করেছিল এআইসিসি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরেই জোট সংক্রান্ত আলোচনা করতে এআইসিসি নেতাদের কলকাতায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এআইসিসি নেতা বি কে হরিপ্রসাদ বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশ পেয়ে আমরা ১৫ তারিখ কলকাতায় যাচ্ছি। সেখানে ভোট নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও বিরোধী দলনেতার সঙ্গেও কথা বলব। এ ছাড়াও পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদের সঙ্গেও ভোট নিয়ে কথা বলতে হবে। এখনই সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাব না। যথা সময়েই আমরা সব কিছু জানিয়ে দেব।’’
পশ্চিমবঙ্গে ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ভোট ধরেই এগোচ্ছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। তাই এ বার জোট করতে এআইসিসি অনেক বেশি আন্তরিক বলেই জানাচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতা। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটির মতামতকে উপেক্ষা করেই জোট করেছিল বঙ্গ সিপিএম। ভোটে ভরাডুবির পর কেন্দ্রীয় কমিটির কড়া সমালোচনার মুখেও পড়েন সূর্যকান্ত মিশ্ররা। কিন্তু পাঁচ বছরের ব্যবধানে বাংলার রাজনীতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে সিপিএমের পলিটব্যুরো-ও। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে এবার রাজ্য সিপিএম অনেক বেশি নমনীয়। কিন্তু মুখে কিছু না বললেও, আসন রফা নিয়ে অযথা বিলম্বে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিট। এক রাজ্য কমিটির নেতার কথায়, ‘‘জোট এখন দুই শিবিরের কাছেই প্রয়োজনীয়। দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্বই এখন জোটে আগ্রহী। এমতাবস্থায় যদি দ্রুত আসনের বিষয়ে নিষ্পত্তি না হয়,তা হলে লোকসভা ভোটের মতো বড় ভুল আবারও হয়ে যাবে।’’ কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষে কেনই বা এই বিলম্ব হচ্ছে? জবাবে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ঋজু ঘোষাল বলেন, ‘‘কোনও বিলম্ব হয়নি। প্রত্যেক জেলা সভাপতিকে তাঁদের জেলাভিত্তিক আসনের দাবির তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিছু জেলা তাদের রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছে। আর কিছু জেলার এখনও বাকি রয়েছে। আশা করছি এই সপ্তাহে সব জেলার রিপোর্ট বিধান ভবনে জমা পড়ে গেলেই আগামী সপ্তাহের মধ্যে আসন রফার বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy