প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হল আরও তিন জনকে। —নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হল আরও তিন জনকে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুস সাত্তার ওই কমিটির সদস্য হলেন। এর ফলে কমিটির কলেবর বেড়ে হল ২৭। সরাসরি এআইসিসি-র হস্তক্ষেপে এমন ঘটনায় লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে বিড়ম্বনা বাড়ল।
সূত্রের খবর, এখন প্রদেশ কংগ্রেস যাঁরা চালান, তাঁরা ওই তিন নেতার নাম সুপারিশ করেননি। কিন্তু তুলনায় স্বল্প পরিচিত নেতাদের নাম রয়েছে অথচ অমিতাভেরা নেই, এমন কমিটি দেখার পরে প্রশ্ন উঠেছিল নানা মহলে। শেষ পর্যন্ত বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচনী কমিটিতে তিন জনকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছেন। সর্বভারতীয় কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সম্মতি না নিয়েই সরাসরি এআইসিসি ওই তিন জনকে নির্বাচনী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর আগে অন্য কয়েকটি রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে, এ বার বাংলাতেও ঘটল। গোটা ঘটনায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের মুখ পুড়ল বলেই দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা। এর আগে রাজ্য থেকে এআইসিসি সদস্য মনোনয়নের সময়েও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল।
অমিতাভ, সন্তোষদের সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বের সম্পর্ক ভাল। বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতার সিদ্ধান্ত হলে তাঁদের ভূমিকা কাজে আসবে বলেই কংগ্রেস সূত্রের মত। অমিতাভের কথায়, ‘‘মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাহুল গান্ধী-সহ সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বকে ধন্যবাদ। এর আগে বরকত গনি খান চৌধুরী, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমেন মিত্রদের মতো নেতাদের সঙ্গে এমন কমিটিতে কাজ করেছি। তাই এই বিষয়টা নতুন নয়। এআইসিসি নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত আস্থা রেখেছেন বলে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’’
ঘটনাচক্রে, এ দিনই সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক শেষ হয়েছে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা মাথায় রেখেই ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি সেরে ফেলার বার্তা সেখানে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজনে একা লড়ার পরিস্থিতি এলেও দল যাতে তৈরি থাকে, তার জন্য প্রাথমিক প্রার্থী বাছাইও করে রাখার জন্য রাজ্য কমিটির জবাবি ভাষণে পরামর্শ দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সূত্রের খবর, কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কী অবস্থান নিচ্ছে, তা স্পষ্ট করে জানানোর জন্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের তরফে কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছে।
রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেছেন, ‘‘সাংগঠনিক কমিটি তৈরির কথা হয়েছে। এখন বুথভিত্তিক কাজ চলছে। এ বার বিধানসভা-কেন্দ্রিক কর্মী সম্মেলন হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেত মজুর সংগঠন মিলে রাজ্যে যে আইন অমান্য কর্মসূচি নিয়েছে, দল হিসেবে সিপিএম তা সমর্থন করবে। সেলিমের বক্তব্য, ‘‘২১ তারিখ ভাষা দিবসে পালন করা হবে ‘রেড বুক ডে’। মাতৃভাষায় মার্ক্সবাদের চর্চায় এই কর্মসূচি হবে।’’
বাম শ্রমিক, কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের তরফে এ দিনই জানানো হয়েছে, ১৩ তারিখ জেলা শাসকের দফতরে অভিযান এবং আইন অমান্য আন্দোলন হবে। গোটা দেশে ১৬ তারিখ ওই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হলেও পরীক্ষার কারণে এখানে ১৩ তারিখ হবে। সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহুর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের মোদী সরকার ও আমাদের রাজ্যের বর্তমান শাসক দল জনজীবনের মূল সমস্যা সঙ্কটগুলোকে আড়াল করছে। মন্দির-মসজিদ-গির্জা-জাতপাতের উন্মাদনা তৈরি করছে। মানুষের জীবন-জীবিকার প্রশ্নে লড়াইকে আমরা তীব্র করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy