মুকুল রায়
তাঁকে ঘিরে নানারকম জল্পনা ছিলই। দিল্লির বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর তপ্ত বাদানুবাদের খবর সেই জল্পনার আগুনে অক্সিজেন জুগিয়েছিল। দিল্লিতে সপ্তাহব্যাপী বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যে আলোচনা চালাচ্ছেন, তাতে হাজির না থেকে তিনি কলকাতায় ফিরে আসায় সেই গুঞ্জন আরও বাড়ে। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে অবশ্য যাবতীয় জল্পনা নস্যাৎ করার চেষ্টা করলেন মুকুল রায়। তিনি বিজেপিতে থাকছেন এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে যথাযোগ্য সম্মানই দিচ্ছেন, বললেন মুকুল।
তৃণমূলের ফিরতে চলেছেন মুকুল রায় — গত কয়েক মাস ধরেই এই জল্পনা ঢিমেতালে চলছে। যদিও মুকুল নিজে বার বার সেই গুঞ্জন খারিজ করে দিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বৈঠকে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাদানুবাদে মুকুল রায় জড়িয়ে পড়েন খবর। তার জেরেই তিনি বৈঠক ছেড়ে শুক্রবার আচমকা কলকাতায় ফিরে আসেন বলে বিজেপির একাংশের দাবি। আর এই ঘটনাক্রমকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির জল ফের ঘোলা হতে শুরু করে। যাঁকে কেন্দ্র করে এই গুঞ্জনের ঘূর্ণিপাক সেই মুকুল রায় অবশ্য বিষয়টি লঘু করার চেষ্টা করেন। তাঁর বক্তব্য, চোখের চিকিৎসার জন্য তিনি দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেছেন। এর মধ্যেই গোটা ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়। মুকুল রায়কে ফের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়ে রাখলেন মুকুল। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘আমি বিজেপিতে আছি, বিজেপিতেই থাকব।’’ তবে তাঁকে ঘিরে এই গুঞ্জন কেন? মুকুল রায়ের উত্তর, ‘‘পুরনো দলের লোকেরা চক্রান্ত করে কী পাবে? আমি আর ফিরছি না।’’
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে আরও এক ধাপ এগিয়ে মুকুল রায় বলেন, ‘‘আমি বিজেপিতে থেকে ১০০ শতাংশ সন্তুষ্ট। অমিত শাহ প্রকাশ্যে আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর থেকে বড় আর কী হতে পারে।’’ তাঁর মতে তিনি বিজেপি ছেড়ে দিচ্ছেন, এ কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সেনার জন্য আবৃত্তি, ভিডিয়ো প্রকাশ, ফের জল্পনার কেন্দ্রে রাজীব
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি, নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার থেকে দিল্লিতে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। দলের সর্বভারতীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ এবং পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এই বৈঠক ডাকেন। কিন্তু সেই বৈঠকে কারা থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিলীপ ঘোষ নিজের হাতে রাখতে চাইছিলেন বলে খবর। আর তা নিয়েই পরিস্থিতি গরম হতে শুরু করে। পরে আরও নানা বিষয় নিয়ে দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ের মতপার্থক্য সঙ্ঘাতের চেহারা নেয়। বুধবার বৈঠক বসেছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের বাড়িতে। সেখানে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মুকুল রায়ের বাদানুবাদ তুঙ্গে পৌঁছয় বলে খবর। এর পর বৃহস্পতিবার দিল্লিতে থাকলেও বৈঠকে যোগ দেননি মুকুল রায়। শুক্রবার তিনি ফিরে আসেন কলকাতায়।
আরও পড়ুন: সোজা বাংলায় বলছি: দলের নাম-প্রতীক সরিয়ে অভিনব প্রচার তৃণমূলের
কলকাতায় পা রাখার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের দিল্লি থেকে মুকুলের কাছে বার্তা আসে। তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, আগামী শুক্রবার অমিত শাহ মুকুলের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন। এর মাঝেই সাংবাদিক বৈঠকে নিজের অবস্থান মুকুল যে ভাবে স্পষ্ট করলেন তাতে তাঁকে ঘিরে চলতে থাকা জল্পনা কমবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy