ভোটার কার্ড হাতে গঙ্গাধর। পাশে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র।
কোনও সরকারি পরিচয়পত্র না থাকায়, অসমে কাজ করতে গিয়ে যেতে হয়েছিল ‘ডিটেনশন’ শিবিরে। মাস তিনেক আগে শর্তাধীন জামিনে বাড়ি ফিরেছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণপুরের যুবক গঙ্গাধর পরামানিক। মঙ্গলবার বাড়ি গিয়ে তাঁকে ভোটার পরিচয়পত্র দিল জেলা প্রশাসন। বছর পঁয়ত্রিশের গঙ্গাধর বলেন, ‘‘অবশেষে ভারতীয় হওয়ার প্রমাণপত্র পেলাম। আর কোনও ডিটেনশন শিবিরে যেতে হবে না।’’
বিষ্ণুপুরের রাধানগর সারদাপল্লির বাসিন্দা গঙ্গাধর জানান, বাড়িতে দারিদ্রের কারণে বছর ষোলো আগে কাজের খোঁজে বেরোন। সঙ্গে পরিচয়পত্র ছিল না। গুয়াহাটিতে হোটেলে কাজ পান। বছর চারেক আগে, পরিচয়পত্র দেখাতে না-পারায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়। ঠাঁই হয় অসমের গোয়ালপাড়ায় ডিটেনশন শিবিরে। সেখান থেকে বেরোনোর চেষ্টা করায় মার খেতে হয় বলে অভিযোগ।
কয়েক মাস আগে ওই শিবিরে সমীক্ষা চালানো এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদের নজরে পড়েন গঙ্গাধর। তাঁদের চেষ্টায় গত সেপ্টেম্বরে ‘ফরেনার্স ট্রাইবুনাল’ থেকে বিষ্ণুপুর থানায় নিয়মিত হাজিরার শর্তে জামিন পেয়ে বাড়ি ফেরেন। প্রশাসন সূত্রের দাবি, তার পরেই তাঁর সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, ‘‘উনি যে স্কুলে পড়তেন, সেখানে খোঁজ নিয়ে জন্মতারিখ-সহ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওঁর মা-বাবার ভোটার পরিচয়পত্র দেখা হয়। এ দিন গঙ্গাধরের হাতে ভোটার কার্ড দেওয়া হল।’’ তিনি জানান, পরিবারটিকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ও জবকার্ডের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বিজেপির সরকার এনআরসি-র নামে গঙ্গাধরের মতো মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। তৃণমূলের সরকার তাঁর হাতে বৈধ পরিচয়পত্র তুলে দিল।’’ বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তির পাল্টা দাবি, ‘‘ভারতীয় হিসেবে প্রত্যেকের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা উচিত। পরিচয়পত্র না-থাকায়, ওঁকে শিবিরে রেখেছিল অসম সরকার। দেশের বাইরে তো পাঠায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy