দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল।—ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরের উন্নয়ন নিয়ে মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই নড়েচড়ে বসল জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার জেলাশাসক নিখিল নির্মলের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জেলা পরিষদের যাবতীয় সম্পত্তির হিসেব এবং মালিকানার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে নথিপত্র-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করবে মানস সরকারের নেতৃত্বাধীন জেলা প্রশাসনের দশ জনের একটি কমিটি। এ ব্যাপারে কমিটিকে সাহায্য করবেন জেলা পরিষদের মেন্টর সোনা পাল এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
জেলা প্রশাসনের এই তৎপরতার পিছনে দু’টি কারণ উঠে আসছে। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের মতে, উন্নয়নের কাজ করতে গেলে গোড়াতেই যেটা দরকার সেটা হল টাকা। তাই সম্পত্তির হিসেব করে রাজস্ব আদায়ের সম্ভাব্য সূত্রগুলি চিহ্নিত করতে চায় জেলা প্রশাসন। জেলা পরিষদের অধীনে নানা ভবন, টার্মিনাস, অতিথিশালা-সহ বিভিন্ন ধরনের সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তির অবস্থা কী স্তরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আদৌ সেই সব সম্পত্তি জেলা পরিষদের দখলে রয়েছে কি না, সেখান থেকে রাজস্ব আদায়ের অবস্থা কেমন, ভাড়া কতটা আসছে— সবটাই খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি। তার পরে এই সব সম্পত্তি থেকেই নিজস্ব রাজস্ব ভাণ্ডার তৈরি করতে পারে জেলা পরিষদ। যা উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
কিন্তু প্রশাসনের অন্য একটি অংশের মতে, দক্ষিণ দিনাজপুরে সভাধিপতি-সহ পাঁচ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিশেষ করে সভাধিপতি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে জেলা পরিষদের সম্পত্তির কোনও পরিবর্তন হয়েছে কি না, বা কেউ তাতে কোনও অংশীদারি তৈরির চেষ্টা করেছে কি না, তা বুঝতেই জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ। রাস্তা সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা পরিষদে যে সব দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল, জেলা প্রশাসন তার সব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, আদতে যার উদ্দেশ্য বিজেপির ‘সংশ্রব’ থেকে জেলা পরিষদকে মুক্ত করা। যদিও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা অর্থহীন। সম্পত্তির হিসেবের পাশাপাশি আমজনতার জন্য বরাদ্দ উন্নয়ন আদৌ তাঁদের কাছে পৌঁছচ্ছে কি না, তা বুঝতে সরাসরি তৃণমূল স্তরে পৌঁছবেন বিডিওরা। সঙ্গে থাকবেন জনপ্রতিনিধিরা। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রকল্পের গতিপ্রকৃতি বুঝতে আমজনতার কাছে যাচ্ছেন অফিসারেরা। যার পোশাকি নাম ‘পরিদর্শন অভিযান’। কিন্তু সেখানে জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিয়মিত ছিল না। মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি-সহ অন্য জনপ্রতিনিধিদের কাজে লাগানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy