আমলা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন আদিবাসী হো সম্প্রদায়ের দুই বোন রিনা ও বীণা নায়েক। নিজস্ব চিত্র।
বাবা দিনমজুর। দু’বেলা খাবার জোটে অতি কষ্টে। প্রতিদিন দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হয় বেঁচে থাকার জন্য। এ সবের মধ্যেই আমলা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন আদিবাসী হো সম্প্রদায়ের দুই বোন রিনা ও বীণা নায়েক। ঘাটালের পান্না গ্রামের বাসিন্দা ওঁরা। যে গ্রামে মেয়েদের ১৪-১৫ বছরেই বিয়ে হয়ে যায়, সেখানকার দুই মেয়ের এই স্বপ্নের কথা জানতে পেরে তাঁদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য প্রশাসন। তাঁদের বিডিও হওয়ার স্বপ্ন যাতে ডানা মেলতে পারে, সে জন্য নিখরচায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতির ব্যবস্থাও করা হল ঘাটালের মহকুমাশাসকের দফতরে।
করোনা পরিস্থিতিতে গত এপ্রিলে পান্না গ্রামে ত্রাণ দিতে গিয়ে রিনা-বীণার কথা জানতে পারেন প্রশাসনিক কর্তারা। বাবা-মাকে নিয়ে চার জনের সংসার। বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। অতি কষ্টে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বড় মেয়ে রিনা ইংরেজি নিয়ে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করছেন। ছোট মেয়ে বীণা বাংলা নিয়ে পড়ছেন। স্নাতক স্তরের শেষ বর্ষের পরীক্ষার্থী।তবে উচ্চশিক্ষা বা চাকরির পরীক্ষা দেওয়া দুই বোনের কাছে স্বপ্নই থেকে যেত, যদি না ওই ত্রাণ বিলির সময়ে ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পালের সঙ্গে তাঁদের দেখা না হত।
ওই দিন মহকুমাশাসক জানতে পারেন, দুই বোন পড়াশোনা করে চাকরি করতে চায়। কিন্তু কোথায়,কী ভাবে, চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতিনেওয়া যায় সে ব্যাপারে তাঁদের তেমন কোনও ধারণা ছিল না। প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য অসীমবাবু ব্যক্তিগত ভাবে দুই বোনকে পঁচিশ হাজার টাকা দেন। কিছু ব্যবসায়ীর সহযোগিতায় মোট পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে। তবে শর্ত একটাই, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে উচ্চশিক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মহকুমাশাসকের দফতরে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ট্রেনিং সেন্টারে দুই বোনকে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ইতিমধ্যেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অর্জুন পালের কাছে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন দুই বোন।
আরও পড়ুন- জুলাইয়ে ছ’টি রাফাল বিমান আসছে বায়ুসেনার হাতে, অগস্টে প্রস্তুত হবে যুদ্ধের জন্য
প্রত্যন্ত গ্রামের দুই আদিবাসী মেয়ের স্বপ্ন ধীরে ধীরে ডানা মেলতেও শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে অসীম পাল বলেন, ‘‘গত বছর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফ্রি ট্রেনিং সেন্টার চালু করা হয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও সেখানে কোনও আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। আমাদের কর্তব্য ওঁদের পাশে দাঁড়ানো। আপাতত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করছেন ওই দুই বোন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy