Advertisement
E-Paper

বেআইনি ‘দত্তক’ ঘিরে উদ্বেগ প্রশাসনের

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১৪
Share
Save

দশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তি করে এক দম্পতি নিজেদের সন্তান অন্য এক দম্পতিকে হস্তান্তর করেছেন বলে একটি অভিযোগ উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকুলতলায়। বছর দুই আগের সেই ঘটনায় পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, সদ্যোজাতকে এ ভাবেই ‘দত্তক’ নিতে চান ওই দম্পতি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, দত্তক নেওয়ার এই পন্থা আইনবিরুদ্ধ। তখন ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন বলে মনে করা হলেও, পরে দেখা গিয়েছে, এই ভাবে সন্তান হস্তান্তরের প্রক্রিয়া এখনও চলছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা থেকে এমন বেশ কিছু ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি হস্তক্ষেপ করেছে। কমিটির চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় টামটা জানান, মাঝেমধ্যেই তাঁদের কাছে স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তি করে সন্তান হস্তান্তরের খবর আসে। দাতা ও গ্রহীতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে হয়।

স্ট্যাম্প পেপারে করা চুক্তিতে অর্থের লেনদেনের কথা লেখা থাকে না। তবে এই দান ও গ্রহণের মধ্যে আর্থিক সম্পর্ক নেই, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই ঘটনা বন্ধ না হলে দত্তক নেওয়ার আইনি সংস্থানের সমান্তরাল একটি প্রথা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া, এই বেআইনি উপায়ে দান করা সন্তানদের যে পাচার করা হবে না, তারও নিশ্চয়তা নেই। জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির এক সদস্যের কথায়, “এমন ঘটনা নজরে এলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সব ঘটনা নজরে না-ও আসতে পারে।”

মানবপাচার রোধে সিআইডির বিশেষ শাখা, অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট রয়েছে। সিআইডির এক আধিকারিক বলেন, “গরিব দম্পতির থেকে সন্তান কিনে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ সম্প্রতি আসেনি। তবে খোঁজখবর করা হবে।”

শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনাই নয়, কলকাতাতেও এমন ঘটনা আগে নজরে এসেছিল, জানান জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন মহুয়া শূর রায়। গত চার-পাঁচ বছরে চার-পাঁচটি ঘটনা কমিটির নজরে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। এই সব ক্ষেত্রে সন্তানের জন্মের শংসাপত্র সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় যাচাইয়ের জন্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেন। সূত্রের খবর, হুগলির চুঁচুড়াতেও স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তি করে সন্তান হস্তান্তরের একটি ঘটনা সামনে আসে গত বছর। পরে সেই শিশুটিকে হোমে পাঠানো হয়। হাওড়ার বালিতেও অর্থের বিনিময়ে শিশু হস্তান্তরের একটি ঘটনা ঘটে বলে তদন্তে প্রকাশ।

রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “এ ভাবে সন্তান দত্তক নেওয়া বেআইনি। নিলেও শিশুর বাবা-মায়ের নাম কিছুতেই বদলাবে না। কেউ অন্যের সন্তান লালন-পালন করতে পারেন। কিন্তু কেউ তাঁর সম্তানকে দিয়ে দিতে চাইলে তা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সামনেই হতে হবে। তার পরেই সেই শিশুকে দত্তক দেওয়ার আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আনা হবে। কোনও শিশুকে দত্তক দেওয়ার জন্য আমাদের কাছে হস্তান্তর করার পরেও আমরা কিছু সময় অপেক্ষা করি। কারণ, মা-বাবার মনের পরিবর্তন হতে পারে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Child Adoption Sundarban

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}