বুধবার ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে অধীর চৌধুরী, পাশে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। — নিজস্ব চিত্র।
ডিভিসি বিতর্ক নিয়ে এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। বুধবার ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না তাঁর দফতর, ডিভিসি নিয়ে কে সঠিক কথা বলছে, তিনি তা জানতে চান। বাংলার মানুষের সংশয় দূর করার জন্য এই প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন। সেই কারণে তিনি হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতর জন্য প্রথম থেকে ডিভিসির জল ছাড়ার সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ে ডিভিসি। রাজ্যের আপত্তি শোনা হয় না। আবার সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা একটি নথিতে দেখা গিয়েছে, ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে যে দিন মমতা চিঠি দিয়েছেন, তাঁর তিন দিন আগেই ‘বন্যা পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে বলে আটটি জেলাকে সতর্ক করেছিল নবান্ন। অর্থাৎ, ডিভিসি যে জল ছাড়তে পারে, সেই সংক্রান্ত সতর্কতা ছিল নবান্নের কাছে। এখানেই অধীর প্রশ্ন তুলেছেন, মমতা নিজে না কি তাঁর দফতর, সঠিক কথা কে বলছে?
অধীর বলেন, ‘‘মমতা এর আগেও ‘ম্যান মেড’ বন্যার কথা বলেছেন। এখনও বলছেন। আমি এ বিষয়ে হাই কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর তদন্ত হোক। এটা কেন্দ্রের দোষ, রাজ্যের দোষ, না উভয়ের দোষ? বাংলার মানুষ তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি পাঁচ বারের সাংসদ ছিলাম। আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি। ১৯৬৪ সাল থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের চুক্তি চলছে। প্রথমে বিহার, বাংলা এবং ডিভিসির মধ্যে এই চুক্তি হয়েছিল। বিহার ভেঙে যাওয়ার পর ঝাড়খণ্ড, বাংলা এবং কেন্দ্রের মধ্যে চুক্তি হয়। ডিভিসি একা সিদ্ধান্ত নিয়ে জল ছাড়তে পারে না। রাজ্যের বিভিন্ন জেলাকে তো সাত দিন আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল, ডিভিসি জল ছাড়তে পারে। তা হলে মুখ্যমন্ত্রী সঠিক, না তাঁর দফতর সঠিক? এটা স্পষ্ট হওয়া দরকার।’’
ডিভিসির ঘাড়ে ‘দোষ চাপিয়ে’ তৃণমূল নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে, দাবি অধীরের। তিনি বলেন, ‘‘আমার জেলাতেও বন্যা হয়। আমি কান্দি মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত করে দেখিয়ে দিয়েছি, বন্যা কী ভাবে ঠেকাতে হয়। কান্দি এবং ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান তো একই সময়ের। কান্দি মাস্টারপ্ল্যানের পর বন্যা সেখানে অতীত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ঘাটাল খাটাল হয়ে পড়ে আছে। সেখানে কাজের কাজ হচ্ছে না। বন্যায় মানুষ মরছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে অন্য জেলার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন।’’
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে হাই কোর্টের অনুমতিতে বুধবার থেকে ধর্মতলায় ধর্নায় বসেছে কংগ্রেস। দু’দিনের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা। বুধবার সেই ধর্নামঞ্চে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারকে পাশে নিয়েই বসেছিলেন অধীর। ডিভিসি বিতর্কে হাই কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্তও তিনি জানিয়েছেন দলের ওই মঞ্চ থেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy