রবিবার হুগলির ওয়াটার থিম পার্কের র্যাম্পে হাঁটলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক জন অ্যাসিড-আক্রান্ত। —নিজস্ব চিত্র।
অ্যাসিড হামলার শিকার। তবে তাতেও দমেননি তাঁরা। জীবনকে অন্য খাতে বইয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমন কয়েক জন অ্যাসিড-আক্রান্ত এ বার হাঁটলেন ‘অন্য পথেও’। রবিবার হুগলির ওয়াটার থিম পার্কের র্যাম্পে দেখা গেল তাঁদের। সৌজন্যে, মোটরবাইকআরোহীদের সংগঠন, মোটো ভিশন।
অ্যাসিড-আক্রান্তদের র্যাম্পে নিয়ে আসার পিছনে সংগঠনের একটি উদ্দেশ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোটো ভিশনের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, বেশির ভাগ অ্যাসিড হামলা করেন বাইকআরোহীরা। তাই সমাজের চোখে বাইকআরোহীরাও কলঙ্কের শিকার। সে কারণেই আক্রান্তদের পাশে থেকে সমাজে বার্তা দিতে চান তাঁরা— অ্যাসিড হামলার শিকার তরুণী বা মহিলারা একা নন, তাঁদের পাশে অনেকে রয়েছেন।
রবিবার র্যাম্পে হাঁটেন সুনীতার মতো অ্যাসিড হামলার শিকার কয়েক জন। সুনীতা বলেন, ‘‘প্রতি মুহূর্তেই আমাদের লড়াই চলছে। ট্রেনে-বাসে আমাদের পাশে কেউ বসতে চান না। অনেকে বলেন, ‘মুখ ঢেকে রাখতে, না হলে বাচ্চারা ভয় পায়।’ এক সময় এ সব শুনে খুব খারাপ লাগত। এখন আর এ নিয়ে ভাবি না। বাইকারদের সংগঠনটি যে এ ধরনের অনুষ্ঠান করেছে, তাতে আমরা খুশি। অন্তত কিছু মানুষ তো আমাদের পাশে রয়েছে।’’
অ্যাসিড-আক্রান্তদের জন্য র্যাম্পে হাঁটা ছাড়াও টক শো, ব্যান্ডের গান এবং খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছিল মোটা ভিশন। সংগঠনের সদস্য সাগ্নিক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মহিলাদের উপর অ্যাসিড হামলা একটা ভয়ঙ্কর অপরাধ। যাঁরা এ সব করেন, তাঁরা জানেনও না, কতটা কষ্টে বেঁচে থাকেন অ্যাসিড হামলার শিকার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাইকে চেপে এই অপরাধ ঘটে। সে সব অপরাধীকে আমরা বার্তা দিতে চাই, আক্রান্তদের পাশে রয়েছেন বাইকাররা। আজ (রবিবার) একটা গোটা দিন তাঁদের জন্য রেখেছি আমরা।’’
সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন, রবিবার র্যাম্পে উপস্থিত আক্রান্তরা বুঝিয়ে দিলেন, অ্যাসিড হামলার পরেও জীবন শেষ হয়ে যায়নি। হামলার শিকার কেউ পড়াশোনা চালাচ্ছেন। কেউ বা চাকরি করেছেন, ঠিক সমাজের আর পাঁচটা মানুষের ভিড়ে মাথা উঁচু করে নিজেদের লড়়াই চালাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy