Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
CPM R G kar Hospital Incident

নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত দলের ‘গুণধরেরাই’ আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘মুখ’! ক্ষোভ ধূমায়িত সিপিএমে

কোথাও দেখা যাচ্ছে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর কর্মসূচিতে মাইক ধরছেন দলের যুবনেত্রীকে প্রকাশ্য রাস্তায় পেটানো নেতা। আবার কোথাও আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বক্তৃতা করছেন ‘নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত’।

Accused of violence against women come to front row protesting RG Kar Hospital incident, anger rises in CPM

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৪ ১৭:২১
Share: Save:

দক্ষিণ কলকাতা থেকে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল, দক্ষিণ হাওড়া থেকে বারাসত— নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত এবং শাস্তিপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীরাই মূলত আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচিতে মাইক হাতে নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। যা নিয়ে সিপিএমের অভ্যন্তরে ক্ষোভ ক্রমশ ধূমায়িত হচ্ছে। দলের প্রথম সারির নেতারাও একান্ত আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন, স্থানীয় স্তরে নানা সমীকরণের কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। যা এই পর্বে দলের জন্য খুব একটা ভাল হচ্ছে না। সিপিএমের একাংশের অভিযোগ, সব ক্ষেত্রেই জেলা নেতৃত্বের কেউ কেউ ‘প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়’ দিচ্ছেন। যার ফলে এই ঘটনা ঘটছে। এবং তা ঠেকানো যাচ্ছে না।

কোথাও দেখা যাচ্ছে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর কর্মসূচিতে মাইক ধরছেন দলের যুনেত্রীকে প্রকাশ্য রাস্তায় পেটানো নেতা। আবার কোথাও আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সিপিএমের ছাত্র-যুব-মহিলাদের কর্মসূচিতে শিক্ষকনেতা হিসাবে বক্তৃতা করছেন ‘নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত’। এই সব ক্ষেত্রেই নারী নির্যাতনের অভিযোগ জমা পড়েছিল সিপিএমের কমিটিতে। যাঁরা অভিযোগকারিণী, তাঁরাও বিভিন্ন ভাবে দলের সঙ্গেই যুক্ত। দক্ষিণ কলকাতার ঘটনায় যেমন ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট নেতা দলীয় স্তরে শাস্তি পেয়েছেন। তাঁকে দল ছ’মাসের জন্য প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছিল। আবার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের শিক্ষকনেতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল দলের অভ্যন্তরীণ কমিটিতে, তা ‘অজ্ঞাত’ কারণে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা কলকাতার জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, ‘‘প্রতিবাদ তো সর্বসাধারণের জন্য। সেখানে তো যে কেউই আসতে পারেন।’’ কিন্তু যে কেউ তো আর মাইক ধরে বক্তৃতা করার সুযোগ পান না? কল্লোলের জবাব, ‘‘যদি নির্দিষ্ট করে আমাদের কাছে বিষয়টি আসে, তা হলে আমরা নিশ্চয়ই দেখব।’’ যদিও দক্ষিণ কলকাতার এক যুবনেত্রীর বক্তব্য, ‘‘এগুলো সবই ছেলেভোলানো কথা। যিনি নারীনিগ্রহে শাস্তিপ্রাপ্ত, তাঁকে নেতৃত্বই প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এতে জেলা কমিটিরও সরাসরি মদত রয়েছে।’’

আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে তাঁর বাড়ির এলাকাতেই টানা কয়েক দিন অবস্থান-বিক্ষোভ করেছে সিপিএমের ছাত্র-যুব-মহিলা সংগঠন। বুধবারই সেই কর্মসূচি শেষ হয়েছে। স্থানীয় সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই মঞ্চেও নারী নিগ্রহে অভিযুক্ত এক নেতা মাইক-হাতে ‘মহিলা সুরক্ষা’ নিয়ে বক্তৃতা করেছেন। বারাসতে এক বহিষ্কৃত যুবনেতা গণসংগঠনের কর্মসূচিতে প্রথম সারিতে থাকছেন বলেও সিপিএমের অনেকের অভিযোগ। দলের এক প্রথম সারির নেতার বক্তব্য, ‘‘আমাদের ভোট না থাকলেও দলের অনেকের কমিটিতে থাকার মোহ রয়েছে। সেই সুবাদেই স্থানীয় স্তরে বিভিন্ন সমীকরণে এই সব ঘটনা ঘটছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE