সুজয় পাল ওরফে কেবু। নিজস্ব চিত্র।
কিছু দিন ধরেই পশ্চিম বর্ধমানে বালির অবৈধ কারবারের ‘মাথা’ হিসেবে নানা মহলে শোনা যাচ্ছিল সুজয় পাল ওরফে ‘কেবু’র নাম। গত ২৩ মে তাঁর বিরুদ্ধে কাঁকসা থানায় বালির অবৈধ কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ দায়ের হয়। মঙ্গলবার রাতে দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড় লাগোয়া একটি মন্দির থেকে কেবুকে ধরে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ।
পুলিশ কমিশনার অজয়কুমার ঠাকুর বুধবার বলেন, ‘‘বালি চুরি রুখতে নিয়মিত অভিযান চলছে। এই গ্রেফতার তারই অঙ্গ।’’ পুলিশ জানায়, ধৃতের বিরুদ্ধে বালির অবৈধ কারবারে জড়িত থাকা-সহ নানা অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার তাঁকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এ দিন আদালতের পথে দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার সুভাষপল্লির বাসিন্দা বছর ৪১-এর কেবু দাবি করেন, ‘‘আমি ঠিকাদার। মিথ্যা মামলায় আমাকে ধরা হয়েছে।’’
বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রশ্ন, মে মাসে কেবুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও, কেন এত দিন তাঁকে ধরা হয়নি! তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতেই ‘কারবার’ চালাতে পেরেছেন কেবু। যদিও পুলিশের দাবি, নিয়ম মেনে সব কিছু হয়েছে। পক্ষান্তরে, তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘রাজ্যে সব ধরনের অবৈধ কারবার রুখতে পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় কোথাও কোনও অবৈধ কারবার চলছে না। প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই নেই।’’
ডিভিসি মোড়ে কেবুর অফিসের সামনে সব সময় কয়েকটি ট্রাক, ডাম্পার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেগুলি অবৈধ ভাবে তোলা বালির পরিবহণে ব্যবহার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। যদিও কেবু-ঘনিষ্ঠদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘দাদার গ্যাস সরবরাহ আর হোটেলের ব্যবসা আছে।’’ তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, গোড়ায় বিভিন্ন বালিঘাটে নিজের লোকজনকে রেখে কী ভাবে গোটা ‘কারবার’ চলে সে খবর নিতে শুরু করেন কেবু। পরে, সুযোগ বুঝে মূলত বালির অবৈধ পরিবহণে হাত পাকান বলে অভিযোগ। সম্প্রতি লকডাউন এবং বেআইনি কয়লা-ক্ষেত্রে কড়া নজরদারির ‘সুযোগে’ বালির অবৈধ কারবারের কার্যত ‘মাথা’ হয়ে ওঠেন তিনি। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমে বালি পরিবহণের পদ্ধতিও তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে এক তদন্তকারী আধিকারিকের দাবি। অবৈধ বালির প্রতিটি গাড়ির ‘সুষ্ঠু পরিবহণের’ জন্য কেবুকে চার হাজার টাকা করে দিতে হত বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কেবুর গ্রেফতারির খবর জানাজানি হতেই পশ্চিম বর্ধমানে অজয়, দামোদরে বিভিন্ন ঘাট থেকে বালি তোলার যন্ত্র সরাচ্ছেন ‘অবৈধ’ কারবারিরা। পাশাপাশি, কেবু-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জনা ছ’য়েক ব্যক্তি ইতিমধ্যেই গা-ঢাকা দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘কাউকে রেয়াত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy