(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের টুইট ঘিরে সোমবার থেকে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, বুধবার সন্ধ্যায় তা শুধু আর রাজনীতির বৃত্তে আবদ্ধ রইল না। আইনি বাঁক নিয়ে নিল। সেলিমকে আইনি নোটিস পাঠালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। সেই নোটিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সমাজমাধ্যমে ক্ষমাপ্রার্থনা করে ওই টুইটটি না মুছে দিলে সেলিমের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করবেন অভিষেক।
অভিষেক চোখের চিকিৎসার জন্য এই মুহূর্তে আমেরিকায় রয়েছেন। মঙ্গলবার তাঁর চোখের কিছু পরীক্ষাও হয়েছে। তার পরেই দেখা গেল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের আইনজীবী আইনি নোটিস পাঠালেন সেলিমকে। এমনিতেই সংশ্লিষ্ট টুইটে ‘পতিতা’ (প্রস্টিটিউট) শব্দটি ব্যবহার করা নিয়ে ঘরে-বাইরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সেলিম। ওই টুইটটি না-মুছলেও পরে ফেসবুক পোস্টে ‘পতিতা’ শব্দটির বদলে ‘যৌনকর্মী’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন সেলিম। কিন্তু তাতে তাঁর বক্তব্য বদলে যায়নি। ফলে অভিষেকের তরফে আইনি পদক্ষেপের অবকাশও রয়ে গিয়েছিল। বুধবার সেটাই হয়েছে। সেলিমের ‘বিড়ম্বনা’র সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে আইনি নোটিস। এতে সেলিমের উপর ‘চাপ’ খানিকটা বাড়ল বলেই মনে করছেন অনেকে।
অভিষেকের আইনি নোটিস নিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানাননি। তবে সিপিএম নেতারা প্রকাশ্যে আইনি নোটিসকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। যদিও একান্ত আলোচনায় এবং ঘনিষ্ঠমহলে অনেকে বলছেন, ‘আলটপকা’ কথা লিখে অযথা বিতর্কে জড়িয়েছেন সেলিম। সমাজমাধ্যম ব্যবহারে আরও সতর্ক থাকা উচিত।
অভিষেককে কটাক্ষ করতে গিয়ে গত সোমবার সেলিম টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘অভিযোগ, তিনি (অভিষেক) তাঁর অসাধু সম্পদ রাখার করার জন্য ১৫ জন বিদেশি পতিতার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন।’’ পাশাপাশি, ‘মাফিয়া-ডন’ বলেও আক্রমণ শানিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। সেলিম কারও নাম করেননি। কিন্তু ওই লেখার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ‘শেয়ার’ করেছিলেন তিনি। সেখানে অভিষেকের সাম্প্রতিক ছবিও ছিল। তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, সেলিম কাকে লক্ষ্য করে ওই কথা লিখেছেন।
টুইটে ‘পতিতা’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে দলের নেতা-নেত্রীদেরও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সেলিম। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ বোস বলেছিলেন, ‘‘আমরা প্রস্টিটিউট (পতিতা) শব্দটা বলি না। আমরা সেক্স ওয়ার্কার (যৌনকর্মী) বলি।’’ একই কথা বলেছিলেন সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর নেতা অনাদি সাহুও। বুধবার দুপুরে সেলিমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে তাঁর মোমিনপুরের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন যৌনকর্মীদের অনেকে। আর সন্ধ্যায় এল আইনি নোটিস।
এখন দেখার, সেলিম ওই নোটিসের দাবি অনুযায়ী সমাজমাধ্যমে ক্ষমাপ্রার্থনা করে টুইটটি মুছে দেন কি না। প্রসঙ্গত, বিতর্ক শুরুর পরেই এক বার ওই টুইট মুছে দেওয়ার কথা উঠেছিল। কিন্তু তখন বলা হয়েছিল, তাতে ওই বিতর্ক আরও দানা বাঁধার সম্ভাবনা। তাই সেটি রেখে দিয়েই ফেসবুকে দেওয়া পোস্টারে শব্দটি পাল্টে দেওয়া হয়। তাতে অবশ্য বিতর্ক সেই আরওই দানা বাঁধল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy