অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে সিবিআইকে নম্বর দিয়েছিলেন ‘শূ্ন্য’। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে ইডির জন্য তাঁর হাত থেকে বেরিয়েছিল ‘মাইনাস দুই’। সেই তিনি, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ফের ইডির তলবে সিজিও কমপ্লেক্সে যাবেন বলে বুধবারই শাসকদল জানিয়েছিল। কিন্তু কৌতূহল হল, বৃহস্পতিবার কত ক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন ইডির আধিকারিকেরা? কখন তিনি বার হবেন? আর বেরিয়ে এ বার কত নম্বর দেবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে?
২০ মে তাঁকে ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। জেরা শেষে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে আস্ত একটা গোল্লা দিতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য।’’ গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে জেরা করে ইডি। ৯ ঘণ্টা জেরা শেষে বেরিয়ে সে দিন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ বলেছিলেন, “তদন্তকারী অফিসারদের আমি কোনও দোষ দিচ্ছি না। ওঁরা ওঁদের কাজ করছেন। আগের দিন বলেছিলাম, ৮ ঘণ্টা জেরার নির্যাস হল শূন্য। আজ বলছি, ৯ ঘণ্টা জেরার নির্যাস হল মাইনাস টু। এর পরের দিন ডাকলে মাইনাস ফোর হয়ে যাবে।”
পরদিন ইডিকে তিনি কত নম্বর দেবেন, তা মোটামুটি ১৩ সেপ্টেম্বরই জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু এর মধ্যে বিবিধ ঘটনা ঘটেছে। রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর মধ্যে অভিষেকের স্ত্রী, মা এবং বাবাকেও ডেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিষেক জায়া-রুজিরা সশরীরে ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছেন। তৃণমূলের সেনাপতির মা ও বাবা সশরীরে না গেলেও তাঁদের আইনজীবী মারফত নথি পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই সব ঘটনাক্রমের কারণে অভিষেক নম্বর আরও কমিয়ে দেন কি না, তা-ও দেখার।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির বৈঠক ছিল। সে দিনই অভিষেককে তলব করা হয়েছিল। অভিষেক দিল্লিতে শরদ পওয়ারের বাড়িতে ওই বৈঠকে না গিয়ে ইডি দফতরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘জটায়ু তাঁর বন্ধু ফেলুদাকে প্রশ্ন করেছিলেন, একই জিনিস আমরা এক ভাবে দেখছি। আর আপনি অন্য ভাবে দেখছেন। সেটা কী করে হয়? জবাবে ফেলুদা বলেছিলেন, আপনার আর আমার মধ্যে তফাত শুধু দৃষ্টিভঙ্গির। আপনারা আগে অপরাধী ঠিক করে নেন। পরে অপরাধ খোঁজেন। কিন্তু আমি আগে অপরাধ খুঁজি। তার পর অপরাধীকে চিহ্নিত করি। ইডিও এখানে জটাযুর মতোই আগে অপরাধী ঠিক করে নিচ্ছে। আগে অপরধা খুঁজছে না। হয়তো তাই তারা অপরাধের গভীরে পৌঁছতে পারছে না।’’ বৃহস্পতিবার অভিষেক ইডি কর্তাদের অন্য কোনও উপমা দেন কি না, সে দিকেও নজর থাকবে।
গত ছ’মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই নিয়ে ষষ্ঠ বার তলব করা হয়েছে অভিষেককে। এর মধ্যে এক বার সিবিআই এবং পাঁচ বার ইডি। ২০ মে-র পর ১৩ জুন ডাকা হয়েছিল অভিষেককে। কিন্তু ‘নবজোয়ার যাত্রা’ ও পঞ্চায়েত ভোটের ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সে দিন তিনি যাননি। আবার এ-ও ঠিক যে, তার আগে কর্মসূচি থামিয়ে বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় ফিরে ২০ মে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। তার পর ৩ এবং ৯ অক্টোবর অভিষেককে ডাকে ইডি। ৩ অক্টোবর দিল্লিতে তৃণমূলের কর্মসূচি ছিল। অভিষেক চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, তিনি যাবেন না। ৯ অক্টোবর না গেলেও পরের দিন ১০ তারিখ নথি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সিজিও কমপ্লেক্সে। বৃহস্পতিবার জেরা পর্বে কী হয়, সে দিকে তাকিয়ে থাকবে গোটা বাংলা। তাকিয়ে থাকবে জাতীয় রাজনীতিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy