ফাইল চিত্র।
কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তে দিল্লি থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তলব পেয়ে আজ, সোমবার সেখানে হাজিরা দিতে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই কারণে এর আগে একাধিক বার তলব করা হয়েছিল। তিনি যাননি। কিন্তু এ বার তাঁর যাওয়া ‘অনিবার্য’ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
অভিষেক রাজনৈতিক মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে ইডি’র মুখোমুখি হবেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। দিল্লি যাওয়ার আগে রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক লড়াইয়ে হেরে গিয়ে প্রতিহিংসায় নেমেছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা ছাড়া এদের (শাসক বিজেপি) কোনও কাজ নেই।’’ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য পাল্টা বলেন, ‘‘এই বিবৃতি নতুন নয়। ধারাবাহিক ভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে বিজেপি। কিন্তু বিজেপি সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না।’’
অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে একই তদন্তের কারণে ১ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি যাননি। রুজিরার দু’টি শিশু সন্তান রয়েছে। অতিমারি পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে সন্তানদের কলকাতায় রেখে দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয় বলে ইতিমধ্যেই ইডি-কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন রুজিরা। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তদন্তকারীরা তাঁর কলকাতার বাড়িতে এসে কথা বলতে পারেন। ইডির আইনজীবীদের বক্তব্য, রুজিরার আর্জি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে।
ওই আইনজীবীদের বক্তব্য অনুযায়ী, অভিষেককে এ নিয়ে তৃতীয় বার নোটিস পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে অভিষেক এক বার দিল্লি গিয়েছিলেন। দিল্লির একটি সূত্রে শোনা যায়, তিনি সেই সময় আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। যদিও নির্দিষ্ট ভাবে এ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে সোমবার ইডি’র মুখোমুখি হতেই তিনি যে দিল্লি যাচ্ছেন, এ দিন অভিষেক তা নিজেই স্পষ্ট করে দেন।
বিমানবন্দরে অভিষেক বলেন, “কলকাতার মামলা, ডেকেছে দিল্লিতে। আমি যাচ্ছি। যে কোনও ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত।’’ বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই অভিষেক বলে আসছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কিছুমাত্র আর্থিক দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তিনি নিজেই ‘ফাঁসিকাঠে’ ঝুলবেন। তাঁর এ দিন আরও এক বার দাবি, ‘‘একশো, তিনশো, পাঁচশো, হাজার কোটির কথা বলা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যদি ১০ টাকা লেনদেনের প্রমাণ থাকে, তা জনসমক্ষে আনুক। তা হলে আমিই ফাঁসিকাঠে ঝুলব! ইডি, সিবিআইয়ের দরকার হবে না।’’
সেই সঙ্গেই নাম না করে তাঁর ‘নারদ-খোঁচা’— ‘‘ইডি, সিবিআই কী করে, তা মানুষ জানেন। যাঁদের তোয়ালে, কাগজে মুড়ে পাঁচ, ছয় লক্ষ টাকা নিতে টিভিতে দেখা গেল, চার্জশিটে তাঁদের নাম নেই! ইডি, সিবিআইয়ের চোখে তখন ছানি!’’
অন্য দিকে, বিজেপি যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না, সেই দাবি করে দলীয় মুখপাত্র শমীকের বক্তব্য, ‘‘মুকুল রায় যখন আমাদের দলে এসেছিলেন, তখন তিনি একটা বিশাল তালিকা, স্বাক্ষরিত ফাইল দলের তদানীন্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছে জমা দিয়েছিলেন। বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাইলে সে দিনই সেই পাতার পর পাতা নথি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারত। কিন্তু বিজেপি সে পথে হাঁটেনি।’’
এই বক্তব্য সম্পর্কে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘শমীকের তো আগে বলা উচিত, কোন জাদুতে ‘ভাগ মুকুল ভাগ’ থেকে ‘আয় মুকুল আয়’ হয়েছিল! বিজেপির সেই প্যাকেজটা ঠিক কী রকম?’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘সেই প্যাকেজেই বিজেপির কোলে গিয়ে নারদ-কাণ্ডে কোনও কোনও অভিযুক্তের হোয়াইটওয়াশ হল কি না, সে প্রশ্নের জবাব কিন্তু শমীকবাবুদের কাছে মিলছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy