অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি তাঁর ‘টিম’ জেলায় সমীক্ষা চালিয়েছে। এ বার বীরভূমের তৃণমূল বিধায়ক ও নেতাদের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি তলব করায় জেলায় সাংগঠনিক রদবদলের সম্ভাবনা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। জেলার শীর্ষস্তর থেকে নিচুতলা— অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত একাধিক নেতার বুক দুরুদুরু বলেই দলের অন্দরে গুঞ্জন ছড়িয়েছে।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও এত দিন বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠনে ‘সরাসরি হস্তক্ষেপ’ করতে কখনও দেখা যায়নি অভিষেককে। জেলায় দলের দায়িত্ব বরবার থেকেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন কেষ্ট তথা জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের উপরে। কিন্তু, প্রথমে সিবিআই ও পরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁর মুক্তির আশু সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছেন দলেরই নেতৃত্ব। অনুব্রত-হীন জেলায় যে ধীরে ধীরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের প্রভাব বাড়বে, তা নিয়ে এক প্রকার নিশ্চিত দলের নেতাকর্মীরা। এই আবহে জেলার তৃণমূল নেতাদের নিয়ে অভিষেক বৈঠকের ডাক দিতেই জেলায় নানা স্তরে বদলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে সাংগঠনিক দিক সামাল দেওয়ার জন্য দুই সাংসদ-সহ আট জনের কোর কমিটি গড়া হয়। তার মাথায় রয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। পাশাপাশি, একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গড়ে তার প্রধান করা হয় লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ (রানা) সিংহকে। কিন্তু, অনুব্রত-পরবর্তী নেতাদের মধ্যে কে বেশি প্রাধান্য পাবেন বা কাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে দলে চাপা দ্বন্দ্ব আছে। অভিষেক সেই দিকেই আগে নজর দেবেন বলে জেলা নেতাদের অনুমান।
বিরোধীদের প্রশ্ন, তা আঁচ করেই কি জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় ছাড়া অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জেলার শীর্ষ নেতাদের কেউ আসানসোলে আদালতে অনুব্রতের সঙ্গে সাক্ষাতে যাননি? যদিও জেলার শীর্ষ তৃণমূল নেতাদের অনেকেই ঘনিষ্ঠ বৃত্তে জানিয়েছেন, মন্ত্রী-বিধায়করা আসানসোলে দেখা করতে গেলে অনুব্রতকে আরও বেশি ‘প্রভাবশালী’ বলার অস্ত্র পাবে সিবিআই। সেই সমস্যা এড়াতে কেউ যাননি। তবে, জেলা সভাপতির সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে।
জেলার শীর্ষ স্তরের মতোই ব্লক স্তরেও সাংগঠনিক রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছেন না জেলা তৃণমূলের অনেক নেতা। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রতিটি ব্লক ধরে সংগঠন ও নেতৃত্বের প্রতি কর্মী ও মানুষের মনোভাব কী, দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি না, গ্রহণযোগ্যতা কেমন, সে-সব ব্যাপারে সমীক্ষা করেছে অভিষেকের নিজের টিম। ফলে তার প্রভাব পড়তেই পারে।’’
তৃণমূল সূত্রেই জল্পনা, সাঁইথিয়া ব্লক তৃণমূলে রদবদলের জোরাল সম্ভাবনা আছে। ১৪ তারিখ ওই ব্লকের বহড়াপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে বোমাবাজি হয়। তা নিয়ে জল অনেকটা গড়িয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বীরভূমে সন্ত্রাসের পরিবেশ শাসকদল তৈরি করতে চইছে বলে অভিযোগ তুলছে বিরোধী শিবির। একই ভাবে গরু পাচার মামলায় নাম উঠে আসা মুরারই অঞ্চলের এক প্রভাবশালী নেতাকে নিয়েও চর্চা চলছে। জেলায় একমাত্র দুবরাজপুর বিধানসভা আসনে হারের জন্য ব্লক সভাপতির ক্ষমতা ইতিমধ্যেই ‘খর্ব’ করা হয়েছে। আবার, নলহাটি ২ ব্লকের এক নেতার সঙ্গে নিয়োগ-দুর্নীতির যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা হবে কি না, সেই জল্পনা রয়েছে।
মলয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘যে কোনও সিদ্ধান্তই হোক, তা অনেক ভেবেই নেবেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy