অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে আবার প্রশাসনিক বৈঠক করতে চলেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগামী ১০ অগস্ট, শনিবার ডায়মন্ড হারবারের রবীন্দ্র ভবনে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যদিও বুধবার বিকাল পর্যন্ত এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা প্রশাসনের তরফে জারি হয়নি।
অভিষেক আপাতত সংসদের অধিবেশনের জন্য দিল্লিতে রয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, অধিবেশন শেষ হলে কলকাতায় ফিরেই ডায়মন্ড হারবার নিয়ে বসবেন তিনি। বুধবার পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে বিধায়ক বা অন্য জনপ্রতিনিধিদেরও বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত একটি বিধানসভার বিধায়ক বলেন, ‘‘বৈঠকের কথা শুনেছি। আমাদেরও ডাকা হবে। তবে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, নিজের সংসদীয় এলাকায় সরকারি প্রকল্পের ‘বাস্তবায়ন’ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন অভিষেক। কোভিডের সময় থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে আলোচ্য বিষয় ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’। সেই মডেল নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই মত এবং পাল্টা মত ছিল। যেমন তিন বছর আগে অভিষেক-প্রণীত ডায়মন্ড হারবার মডেলের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা অভিষেক-অনুগামীরা কল্যাণের কুশপুতুল পুড়িয়েছিলেন ভবানীপুরে। সে সব অবশ্য এখন অতীত। কল্যাণ এখন প্রকাশ্যেই স্বীকার করেন, অভিষেক ‘পরিণত রাজনীতিক’ হয়ে উঠেছেন। আর অভিষেকও ডায়মন্ড হারবার মডেলকে সজুত করতে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন। লোকসভা ভোটের ছ’মাস আগে ডায়মন্ড হারবারে সাংসদ তহবিল এবং, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প-সহ কী কী কাজ হয়েছে, তার রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছিলেন অভিষেক। সেই কর্মসূচি থেকে অভিষেক হিসাব দিয়েছিলেন, দৈনিক এবং প্রতি ঘণ্টায় ডায়মন্ড হারবারে কত টাকা খরচ হয়েছে। তার পরে গত ডিসেম্বরে তাঁর লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় বার্ধক্যভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৃণমূলের সেনাপতি। এমনও ঘোষণা করেছিলেন যে, ১ জানুয়ারি থেকে যদি রাজ্য সরকার ডায়মন্ড হারবারের ৬০ হাজার প্রবীণকে বার্ধক্যভাতা না দেয়, তা হলে তিনি নিজেই তাঁদের ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করবেন। সেই মর্মে নাম নথিভুক্তকরণের কাজও শুরু করে দিয়েছিল ‘টিম অভিষেক’। পরে অবশ্য রাজ্য সরকার সেই প্রবীণদের নাম বার্ধক্যভাতায় নথিভুক্ত করে। পরিষেবা দেওয়াক নিরিখেই অভিষেক এ বার ডায়মন্ড হারবারে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন বলে তৃণমূলের নেতাদের দাবি। প্রসঙ্গত, অভিষেক জিতেছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রার্থীকে ৭ লক্ষ ১০ হাজার ভোটে পিছনে ফেলে।
তবে লোকসভা ভোটের পর থেকে অভিষেকের এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট, বক্তৃতা ইত্যাদি থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, তিনি চান রাজ্য সরকারের কাজ আরও ‘গতিশীল’ হোক। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করতে চান। শাসকদলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘ডায়মন্ড হারবারের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে অভিষেক সেই বার্তা দিতে পারেন। যা নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের জন্য হলেও আসলে উদ্দেশ্য হবে সামগ্রিক রাজ্য প্রশাসনকেই বার্তা দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy