(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘শুভেচ্ছা’ জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ঘটনাচক্রে, অভিষেক যে সময় দিল্লিতে থাকবেন, ওই একই সময়ে দিল্লিতে থাকার কথা শুভেন্দুরও। বিজেপি সূত্রে খবর, সোমবার দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে শুভেন্দুও দিল্লি যেতে পারেন। তাঁর সঙ্গে থাকতে পারেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তাঁদের দেখা হওয়ার কথা।
ধর্মতলায় ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ‘গণ-ঘেরাও’ করার যে ডাক দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন শুভেন্দু। শনিবার তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযোগপত্রে শুভেন্দু দাবি করেছেন, তৃণমূলের ওই কর্মসূচিতে বিজেপি নেতাদের প্রাণ সংশয় হতে পারে। এমনকি, তাঁরও। অভিযোগপত্রের সঙ্গে তিনি মমতা এবং অভিষেকের বক্তৃতার নির্বাচিত অংশ তুলে ধরে ‘ঘৃণাভাষণ’-এর অভিযোগও তুলেছেন।
তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে ‘উস্কানিমূলক’ দাবি করে শুভেন্দুর আশঙ্কা, এতে হিংসা ছড়াতে পারে। তৈরি হতে পারে অশান্তির বাতাবরণ। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু তাঁর লিখিত অভিযোগে মমতা এবং অভিষেকের বক্তৃতার অংশ তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, এই বক্তৃতার পর থেকেই বিজেপি নেতারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। শুভেন্দুর আশঙ্কা, এই কর্মসূচিতে বিজেপির নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হতে পারেন। পুলিশের কাছে তিনি মমতা এবং অভিষেকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতে রবিবার বিমানবন্দরে শুভেন্দুর উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘শুভেচ্ছা রইল।’’ বিরোধী দলনেতাও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘উনি তো এখানে আগুন লাগিয়ে দিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন ইডির কাছে। ২৬ তারিখ বিদেশ যেতে চেয়েছেন। আর তৃণমূলের নীচের তলার কর্মীদের সিভিল ওয়ারের (গৃহযুদ্ধ) জন্য ঠেলে দিয়েছেন।’’
২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে সরব হন। এর পর তিনি দিল্লি অভিযানের কথা ঘোষণা করেন। আগামী ২ অক্টোবর দিল্লি অভিযানের কর্মসূচি। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন, আগামী ৫ অগস্ট বিজেপি নেতাদের বাড়ি গণঘেরাও করার কথা। ওই কর্মসূচির নকশাও মঞ্চ থেকে বাতলান অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করে রাখবেন! একদম গণঘেরাও! বাড়ির কেউ বয়স্ক থাকলে তাঁকে ছেড়ে দেবেন। আর কাউকে ঢুকতেও দেবেন না, বেরোতেও দেবেন না।’’ এর পরেই বক্তৃতা করতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা ওই কর্মসূচিতে বদলের কথা ঘোষণা করেন। কর্মীদের নির্দেশ দেন, বুথে নয়, প্রতি ব্লকে বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে অন্তত ১০০ মিটার দূরে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে।
তৃণমূলের এই কর্মসূচির মোকাবিলায় আইনি এবং রাজনৈতিক পদক্ষেপ করছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য জুড়ে তারা পুলিশে গণ-অভিযোগ দায়ের করার কর্মসূচি নিয়েছে। বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনেও বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিজেপি। শাসক তৃণমূলের পাল্টা দাবি, তাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বিজেপি ভয় পেয়ে এ সব করছে! বাড়ি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছে সিপিএম এবং কংগ্রেসও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy