তাঁর দফতর বা পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাকের নাম করে কেউ ‘তোলাবাজি’ করলে বরদাস্ত করবেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তৃণমূলের প্রায় ৪,৫০০ নেতাকে নিয়ে ভোটার তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক । সেখানেই ভোটার তালিকা সংশোধন তথা ভুয়ো ভোটারমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি দলীয় নেতাদের শৃঙ্খলার পাঠ পড়িয়েছেন তিনি।
সারা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে শাসকদলের বিভিন্ন ছোট-বড়-মাঝারি নেতার নামে মাঝেমধ্যেই তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে। এই ‘ব্যাধি’ কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত সর্বত্রই ছড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এলাকার ‘মাতব্বর’ নেতারা ওই দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত থাকেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে ওই মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শনিবার সেই একই হুঁশিয়ারি দিলেন অভিষেকও।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই ভার্চুয়াল সভায় সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে অভিষেক জানিয়েছেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন, ‘এবি’-র অফিস (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে দলের অন্দরে এই পরিচয়েই ডাকা হয়) এবং আইপ্যাকের নাম করে অনেকে তোলাবাজি করছেন। বেশ কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ পেয়ে দলের তরফে পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বৈঠকে অভিষেক একটি ফোন নম্বর জানান। এর পর নেতৃত্বকে বলেন, যদি তৃণমূলের নেতাদের কাছে গিয়ে কেউ বলেন, তিনি আইপ্যাক থেকে এসেছেন, তা হলে এই নম্বরে যোগাযোগ করে যাচাই করে নেবেন। সেই সঙ্গেই অভিষেক সতর্ক করে বার্তা দেন, তাঁর অফিস থেকে জেলার কোনও নেতার কাছে কেউ গেলে তা আগাম জানানো হবে। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের ময়দানে তৃণমূল নামবে ১৫ বছরের শাসনকালের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা সঙ্গে নিয়ে। তার উপরে দলের কোনও স্তরের নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তা দলের ভাবমূর্তির আরও ক্ষতি করবে। তেমন কিছু যাতে না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে চেয়েছেন অভিষেক।
উল্লেখ্য, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ‘অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি’ কালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে অভিষেকের দফতরের নাম করে তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। অভিষেকের দফতরের এক কর্মী ওই মর্মে শেক্সপিয়র সরণি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। কারণ, ফিরহাদ-অভিষেক সম্পর্ক এমনিতেই ‘মধুর’। তবে মমতার হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত সেই বির্তক থামে। শনিবার দলের অভ্যন্তরীণ সভা থেকে দলের নেতাদের তোলাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ করে রাখলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।