তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
পার্থ-কাণ্ডে উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি ‘কালো টাকা’ কোথা থেকে এল? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘কালো টাকা’ উদ্ধার প্রকল্পকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘৫০ দিন সময় দিন। পরে দেশে কালো টাকা পাওয়া গেলে আমাকে যে শাস্তি দেবেন, মাথা পেতে নেব’। আজ আমরা জানতে চাই, এই টাকার উৎস কী? জবাব দেওয়ার দায়দায়িত্ব কেন্দ্রের।’’
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দলের সমস্ত পদ থেকে অপসারণ ও সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত জানাতে দলীয় দফতরে অভিষেক এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তার আগে সেখানেই দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে অভিষেক ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এ ছাড়াও এ দিন ডেকে নেওয়া হয় ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ ও শশী পাঁজা, মলয় ঘটককে।
প্রসঙ্গ ওঠামাত্র প্রথমে বক্সী জোরালো ভাবে পার্থের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। সবাই একবাক্যে তাতে সায় দেন। সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে যায়। এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তা জানিয়ে দেওয়া হয়। বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে দলের মহাসচিব পদ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বচ্ছতার প্রশ্নেও এ দিন বিজেপি-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের দিকে আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘ব্যপম কেলেঙ্কারির পরে তো মধ্যপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। টাকা তো অনেকের কাছ থেকেই উদ্ধার হয়েছে। উন্নাওয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিজেপি কবে ব্যবস্থা নিল? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর।’’ তাঁর কথায়, ‘‘একটা ঘটনা ঘটেছে পাঁচ-ছ’দিনের সময় তো লাগবে। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ দেখে তৃণমূল যে পদক্ষেপ করেছে দেশে তা আর কোন দল করেছে?’’
এই প্রসঙ্গে এ দিন ফের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘এই দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে পালিয়ে যাওয়া নেতাদের কেউ যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। বিজেপিতে থাকলে আলাদা আইন আর তৃণমূলে থাকলে আলাদা আইন গ্রহণযোগ্য নয়।’’ সেই সূত্রেই তিনি সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের একটি চিঠির উল্লেখ করে বলেন, ‘‘যাঁদের সম্পর্কে সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে তাঁদের ডেকে তদন্ত করা হয়নি।’’
টাকা উদ্ধারের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত পার্থ ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি পুজোর প্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ সামনে এসেছে। তা নিয়ে বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনেও এ দিন পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ২০০ পুজোর উদ্বোধন করেন। কোথায় কে মঞ্চে থাকবেন তাঁর জানার কথা নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মনে রাখতে হবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও তো নীরব মোদীর সঙ্গে দেখা গিয়েছে।’’
অভিষেকের জোড়া প্রশ্নের জবাবে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই চাপানউতোরে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন না। রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছেন, মঞ্চ কার, মালা কার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy