তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
আবাস এবং ১০০ দিনের প্রকল্প নিয়ে মিথ্যাচার করার জন্য জনগণের টাকা নিয়ে যা খুশি তাই করছে বিজেপি! বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘হুঙ্কার’ দিয়ে এমনটাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সেনাপতির দাবি, ২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জন্য এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। এই নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশের চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন অভিষেক। তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন, কেন্দ্র যে টাকা দেয়নি, তা প্রমাণ করতে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে মুখোমুখি বসে তর্ক করতেও রাজি তিনি।
বুধবার থেকে লোকসভার ৪২ জন প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রচার শুরু করছে তৃণমূল। যার পোশাকি নাম ‘অধিকার যাত্রা’। তৃণমূলের সেই কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে পরেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন অভিষেক।
বৃহস্পতিবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে অভিষেক লিখেছেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে ১ পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। আমি যে ভুল তা প্রমাণ করার জন্য বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’’
ঘটনাচক্রে, তৃণমূলের ‘জনগর্জন’ সভা থেকেও কাগজ দেখিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ করছে না কেন্দ্র এবং তা শুরু হয়েছে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হারের পর থেকে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে এসে তিনি দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারকে আবাস প্রকল্পের টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু সে টাকা নিয়ে ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। এর পরেই ১০ মার্চ ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে আবাস প্রকল্পে মোদীর দাবি খণ্ডন করে চিঠি দেখিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘২০২২-’২৩ এবং ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে আবাসের একটি টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।’’ অভিষেক আরও বলেছিলেন, ‘‘কত টাকা ১০০ দিনের কাজে দিয়েছেন, কত টাকা আবাসে দিয়েছেন, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে যদি না-ও পারেন, বিজেপির যে কোনও নেতা, কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও অফিসারকে কলকাতায় পাঠাবেন। চ্যানেল, সঞ্চালক, সময় আপনি ঠিক করুন। দুধ কা দুধ, পানি কা পানি হয়ে যাবে।’’
তৃণমূলের ‘অধিকার যাত্রা’র শুরু হতেই কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে বিজেপি সরকারকে আবার নিশানা করলেন অভিষেক। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থীদের ‘অধিকার যাত্রা’ কী কী করতে হবে, তা-ও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। শুরুতেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে প্রার্থীদের। তার পরে কর্মী সম্মেলন এবং সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়া সেরে নিতে হবে প্রথম দিন। এর পর জনসভা, ছোট বৈঠক এবং এলাকা ধরে ধরে প্রচার শুরু করে দিতে হবে। এই ১০ দিনের মধ্যেই ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় ‘বঞ্চিত’দের সঙ্গে দেখা করতে হবে প্রার্থীদের। রাজ্যের ৫৯ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারকে রাজ্য সরকার ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি দিয়েছে। তৃণমূলের তরফে প্রার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ‘বঞ্চিত’দের কাছে স্পষ্ট করে বলতে হবে, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের টাকা দেয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই তাঁদের মজুরি মিটিয়েছে। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের ভাতে মারতে চেয়েছিল। বাঁচিয়েছেন মমতা। পাশাপাশিই, ব্রিগেডে যে স্লোগান দেওয়া হয়েছিল ‘জনগণের গর্জন, বাংলা-বিরোধীদের বিসর্জন’, তা-ও প্রার্থীদের সোচ্চারে বলতে হবে। অর্থাৎ, বিজেপিকে ‘বাংলা এবং বাঙালির বিরোধী’ হিসাবে তুলে ধরাকেই তৃণমূল ‘ফোকাস’ করতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy