অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সরস্বতী পুজোর বিকেলে রাজভবনে রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠানে রাজ্য বিজেপির কেউই ছিলেন না। ওই অনুষ্ঠানকে ‘নাটক’ বলে আক্রমণ করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তা নিয়ে শনিবার বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেকের মতে, বিজেপির উচিত ছিল রাজ্যপালের ‘বাংলা শেখার আগ্রহ’কে সাধুবাদ জানানো। এই প্রসঙ্গে বঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কথাও টানেন অভিষেক। পাশাপাশি, অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখলের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়েও বিজেপিকে নিশানা করলেন তিনি।
শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতিকে সামনে রেখে রাজভবনে রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠান নিয়ে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গ-বিজেপির নেতারা। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত থাকা সত্ত্বেও সেখানে যাননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অনুষ্ঠানের আগেই সমাজমাধ্যমে দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, করদাতাদের টাকায় এমন একটি ‘অযাচিত এবং হাস্যকর’ মুহূর্তের সাক্ষী তিনি হতে চান না। এ প্রসঙ্গে দিলীপও বলেন, ‘‘কে কোথায় যাবে, তা অন্য বিষয়। তবে আমার মনে হয়, এই ধরনের ড্রামা করা রাজ্যপালের শোভা পায় না।’’ তার প্রেক্ষিতে শনিবার ডায়মন্ড হারবারে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকের পর অভিষেক বলেন, ‘‘দিলীপবাবুর তো সাধুবাদ জানানো উচিত যে, রাজ্যপাল বাংলায় এসে বাংলা শিখছেন।’’
রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছিল ধনখড়ের আমলে। সেই সময় প্রায়ই ধনখড়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলতে দেখা যেত শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের। বোস-পর্বে সেই সম্পর্ক অনেকটাই ‘মধুর’ হয়েছে। উল্টো দিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যপাল বোসের ভূমিকা নিয়ে নানা ভাবে আক্রমণ করে চলেছে বিজেপি। রাজ্যপাল তাদের সঙ্গে ‘সহযোগিতা’ করছেন না বলে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। তার মধ্যেই শুক্রবার দিলীপ দাবি করেছেন, রাজ্যপাল অন্যের বুদ্ধিতে পরিচালিত হচ্ছেন! পাল্টা অভিষেক বলেন, ‘‘রাজ্যপালের বাংলা শেখা যেখানে সাধুবাদযোগ্য, সেখানে দিলীপবাবুরা তাঁকে জগদীপ ধনখড়ের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে বলছেন। তার মানে দিলীপবাবুরা ধনখড়কে পরিচালন করতেন!’’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্যের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিম্যাল জমি দখল করে রাখার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতেও রাজনীতি দেখছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘অমর্ত্য সেনকে যে ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তা লজ্জাজনক। কিছু বাঙালি দিল্লি আর গুজরাতের তল্পিবাহকের কাজ করে চলেছেন!’’ বৃহস্পতিবার অমর্ত্যকে নিশানা করে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দাবি করেছেন, ওই অর্থনীতিবিদ যে পুরস্কারটি পেয়েছেন, তা আদতে নোবেল নয়। উপাচার্যের এই মন্তব্যে শোরগোল তৈরি হয়েছে। রাজনীতির রংও লেগেছে। ঘটনাচক্রে, বিদ্যুৎকে বরাবরই ‘বিজেপি ক্যাডার’ বলে কটাক্ষ করে এসেছেন এ রাজ্যের শাসকদলের নেতারা। অমর্ত্যকে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ প্রসঙ্গে অভিষেকের বক্তব্য, ‘‘অর্থনীতিবিদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেছেন বলেই ওঁকে নিয়ে ওদের (বিজেপির) এত সমস্যা।’’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘সমালোচক’ বলেই বরাবর পরিচিত অমর্ত্য। সে জন্য পদ্ম শিবিরের লাগাতার আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীকে। দিন কয়েক আগেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার। তা নিয়েও অমর্ত্যকে নিশানা করেছিলেন বিজেপি নেতারা। তার পরেই জমি-বিতর্কে জড়ান অর্থনীতিবিদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy