অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকার বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করেছে।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকার বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করেছে। তবে তিনি কর্মসূত্রে আমেরিকায় রয়েছেন বলে সোমবার অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত থাকতে পারেননি। সম্মান গ্রহণ করতে নজরুল মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন অভিজিতের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাতে বঙ্গবিভূষণ সম্মান তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুত্রের পক্ষে সম্মান গ্রহণের পর মঞ্চে বসেই নির্মলা জানিয়ে দেন, বঙ্গবিভূষণের সম্মানদক্ষিণা তিনি অভিজিতের ইচ্ছাতেই ‘লিভার ফাউন্ডেশন’কে দান করবেন।
মঞ্চে একেবারে সামনের সারিতে বসেছিলেন নোবেলজয়ীর মা। নাম ঘোষণার পর তাঁর দিকে এগিয়ে গিয়ে গলায় উত্তরীয় দিয়ে সম্মান প্রদান করেন মমতা। হাতে তুলে দেন সম্মানদক্ষিণার চেক। নির্মলাদেবীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেন মমতা। তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে নির্মলাদেবী বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে যে সম্মান জানানো হল, তাতে আমি অত্যন্ত গর্বিত। গর্বিত অভিজিৎও। আমরা মনে করি, এটা মমতাদির ভালবাসার প্রতীক। তিনি অভিজিৎকে খুব ভালবাসেন। অভিজিৎ এই দেশকে খুব ভালবাসে।’’
সম্মান গ্রহণের পর মঞ্চে বসে বাংলার সঙ্গে তাঁর যোগের কথা বলেন নির্মলাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘আমি মরাঠি মেয়ে। ৬০ বছর ধরে কলকাতায় আছি। এখানকার মানুষই আমার আপনজন। অভিজিতের বাবা যখন মারা গেলেন, ভাইবোনেরা বলল, পুণে এসে থাকো। আমি যাইনি। এখানেই আমার নিজের লোক। আমি কলকাতাকে খুব ভালবাসি।’
অভিজিৎকে দেওয়া বঙ্গবিভূষণ সম্মান প্রসঙ্গে নির্মলাদেবী বলেন, ‘‘মমতাদি এই যে সম্মান দিলেন, এটাই যথেষ্ট। এর সঙ্গে সম্মানদক্ষিণা দেওয়ার দরকার ছিল না। অভিজিৎ আমাকে বলল, বাংলার মানুষের কাজে লাগবে এমন সংস্থাকে এই অর্থ দান করতে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, টাকাটা লিভার ফাউন্ডেশনকে দেব।’’
সোমবারের অনুষ্ঠান মঞ্চে সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারেননি আর এক অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। জার্মানি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত থেকে সম্মান গ্রহণ করেন তিনি। কৌশিকের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাকে আমাদের সকলের প্রণাম জানাচ্ছি। আপনি বিশ্বের এক জন অন্যতম সেরা অর্থনীতিবিদ। আমাদের এই সম্মান গ্রহণ করে গর্বিত করেছেন। বাংলার অর্থনীতিকে উজ্জ্বল করার জন্য আপনি বাংলায় ফিরে আসুন। আপনার কাছে আবেদন রইল। ভাল থাকবেন।’’ প্রত্যুত্তরে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কৌশিকও।
অন্য এক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকেও এ বার বঙ্গবিভূষণ সম্মান দিতে চেয়েছিল রাজ্য। তবে তিনি পরিবারের মাধ্যমে আগেই রাজ্যকে জানিয়েছিলেন, অনেক সম্মান পেয়েছেন। তাই এ বার নতুন কাউকে এই সম্মান দেওয়া হোক। আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছিল সে খবর। তাতে যদিও জল্পনা থামেনি। বিরোধীদের একাংশ দাবি করতে থাকেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে অমর্ত্য সম্মান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই দাবি নস্যাৎ করে সোমবার অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ ত্রিবেদী বলেন, ‘‘আমরা ১৩ জুলাই নিজেরাই অমর্ত্য সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এক বার না দু’বার। ওঁর মেয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনে ছিলেন। জানিয়েছিলেন, তিনি অসুস্থ। যে সময় এই অনুষ্ঠান, তিনি থাকবেন না। তাই অন্য কোনও যোগ্য ব্যক্তিকে সম্মান দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ভুল খবর প্রচারিত হচ্ছে বলে বিষয়টা আমাদের তরফে স্পষ্ট করে দিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy