হালতুতে রবিবার খোলা হল আপের দফতর। নিজস্ব চিত্র।
দিল্লি, পঞ্জাবের পর আম আদমি পার্টি (আপ)-র পাখির চোখ পশ্চিমবঙ্গ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রবিবার কলকাতার কসবায় রাজ্য দফতর খুলল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল। দলের তরফে জানানো হল, এ বার লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের বিরুদ্ধেও লড়াই হবে। রাজনৈতিক মহল বলছে, পঞ্চায়েত ভোট এখন আপের পাখির চোখ। সে কারণেই জেলা জেলায় আগেই দফতর খুলে ফেলেছে। শাসক দল তৃণমূল আপকে ততটা গুরুত্ব দিতেও রাজি নয়। তাদের দাবি, এখনও সংগঠন করতে পাঁচ বছর সময় লেগে যাবে। বিজেপি অবশ্য জানিয়েছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রে সব দলেরই কার্যকারিতা থাকা উচিত।
এত দিন দুর্গাপুর, মেদিনীপুর, কোচবিহারে জেলা দফতর ছিল আপের। কিন্তু রাজ্য দফতর ছিল না। দক্ষিণ কলকাতায় রুবি মোড়ের কাছে হালতুতে রবিবার খোলা হল আপের দফতর। পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত আপের কেন্দ্রীয় নেতা সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘এক বছর আগেই রাজ্য দফতর খোলার পরিকল্পনা ছিল। পঞ্জাব নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাই পিছিয়ে গিয়েছিলাম।’’
অবশেষে রাজ্য দফতর খোলা হল বাংলায়। সেই দফতর খুলতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলেও দাবি করেছেন আপ নেতা সঞ্জয়। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে দফতর খুলতে অনেক ঝামেলা হয়েছে। বাড়ি ভাড়া পেতে সমস্যা হয়েছে। কেউই বাড়ি ভাড়া দিতে চাননি। সকালে পেয়েছি, বিকেলে না করে দিয়েছেন পাড়ার দিদি, দাদারা। শেষ পর্যন্ত এখানে পেলাম। এত দিন মাঠেঘাটে বসে আমরা কাজ করতাম। এ বার আমরা সংঘবদ্ধ করতে পারব।’’
পঞ্চায়েত ভোটে লড়বেন বলেই কি তড়িঘড়ি রাজ্য দফতর খোলা হল কলকাতায়? সরাসরি না বললেও সঞ্জয় বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যে দাঁড়িয়ে শাসক দলকে চ্যালেঞ্জ জানানোই তাঁদের লক্ষ্য। সে জন্য যে সাহসের দরকার, তা আপের রয়েছে। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘এই টুকু দল। আট বছর বয়স। আমরা শিশু। ক্লাস টুতে পড়ি। কার বিরুদ্ধে লড়ছি! সব শক্তি যাঁর পিছনে। সারা পৃথিবীর শক্তি যাঁর পিছনে। ইডি, সিবিআই যাঁর পিছনে। শাসনতন্ত্র যাঁর পিছনে। সেখানে তাঁর গড়ে গিয়ে লড়ছি। সাহস দরকার।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব এখনই বিষয়টিকে আমল দিতে রাজি নন। বিধায়ক মদন মিত্র সিনেমার প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দেন আপকে। বলেন, ‘‘হাম আপকে হ্যায় কওন। আপ কী করছে পশ্চিমবঙ্গে? আপ থেকে তুম, তুম থেকে ম্যায় করতে করতে পাঁচ বছর সময় লাগবে। আলোচনা যত কম করা যায়, ততই ভাল।’’
বিজেপি অবশ্য গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে আপের এই রাজ্য দফতর খোলার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে। তৃণমূলকে এক হাত নিয়ে দাবি করেছে গণতন্ত্রে সব দলেরই সক্রিয় হওয়ার অধিকার রয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে, সুস্থ রাজনৈতিক আবহাওয়ায় সব রাজনৈতিক দলের কার্যকারিতা থাকা দরকার। যাঁর যাঁকে পছন্দ, সেটা করবে। এই যে তোলামুল করতে হবে, নয়তো ১০০ দিনের কাজ দেব না, প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনা দেব না। রুকুউদ্দিন আর তাঁর ছেলে মাথা ফাটাবে, পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁত ক্যালাবে, এ সব পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ করতে হবে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy