মৃত বঙ্কিম স্বর্ণকার। ছবি: সংগৃহীত।
গোখরো উদ্ধার করতে গিয়ে ছোবল খেয়ে মৃত্যু হল সর্প বিশেষজ্ঞের। মঙ্গলবার দুপুরে মালদহের ঘটনা। মৃত বঙ্কিম স্বর্ণকারের (৩০) বাড়ি ইংরেজবাজার থানার শোভানগর এলাকায়।
বেশ কয়েক বছর ধরে সাপ উদ্ধারের কাজে যুক্ত ছিলেন বঙ্কিম। এলাকায় কারও বাড়িতে বিষধর সাপ দেখা গেলেই ডাক পড়ত তাঁর। রাজ্যের সর্পপ্রেমীদের মধ্যেও পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। নেটমাধ্যমে নিয়মিত সাপ উদ্ধার এবং সাপ নিয়ে সচেতনতা প্রচারের নানা ভিডিয়ো পোস্ট করতেন। মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, উদ্ধারের সময় ভিডিয়ো তোলার কারণে মনসংযোগের অভাবেই কি কেউটের ছোবল খেলেন তিনি! কারণ, ছোবলের মুহূর্তের সেই ভিডিয়ো অসতর্কতার ইঙ্গিতবাহী।
স্থানীয় সূত্রের খবর মঙ্গলবার দুপুরে পুখুরিয়া এলাকায় বিষধর সাপ ধরতে যান বঙ্কিম। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভিডিয়ো তোলার সঙ্গী। গোখরোটি ধরার পর সেটিকে সঙ্গীর হাতে দিয়ে উপস্থিত জনতাকে সাপটির পরিচিতি জানাচ্ছিলেন বঙ্কিম। সেই সময় হঠাৎই ওই গোখরোটি তাঁর হাঁটুর কাছে কামড়ে ধরে। সেই অবস্থাতেও সাপটিকে প্লাস্টিকের পাত্রে ভরেন বঙ্গিম। উপস্থিত জনতার কাছে সাপ না মারার আবেদন করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ভর্তি করানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শোভানগর, মিল্কি, পুখুরিয়া, আড়াইডাঙ্গা, মানিকচক-সহ বিভিন্ন এলাকায় কারও বাড়িতে বিষধর সাপ দেখতে পেলেই ফোন যেত বঙ্কিমের কাছে। ফোন পেয়েই হাতে সাপ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতেন ওই যুবক। সাপ উদ্ধারের জন্য যেতেন পাশের জেলাগুলিতেও। বিষধর সাপ ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দিতেন। তবে সাপ ধরার জন্য তাঁর কোনও প্রশিক্ষণ ছিল কি না, তা বলতে পারেননি কেউ।
রাজ্যের বন্যপ্রেমী সংগঠন ‘হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যালায়্যান্স লিগ’ (হিল)-এর সদস্য শুভ্রজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘ দিন ধরেই সাপ উদ্ধারের কাজে জড়িত। বঙ্কিমের বিশেষ পরিচিত ছিলেন তিনি। শুভ্র বলেন, ‘‘বঙ্কিম দক্ষ সাপ উদ্ধারকারী ছিলেন। কিন্তু কিছু দিন ধরে নেটমাধ্যমে সাপ ধরার ভিডিয়ো পোস্ট করার বিষয়টিতে বিশেষ নজর দিচ্ছিলেন। সমস্যা হল, সাপ উদ্ধারের সময় ক্যামেরার দিকে নজর গেলে মনসংযোগের অভাব ঘটে। তা ছাড়া, উদ্ধার করার পরেই সাপ হাতে নিয়ে সচেতনতা প্রচারের কাজ খুবই ঝুঁকির। এমন প্রচারের জন্য বন দফতরের অনুমতিও প্রয়োজন।’’
সর্পপ্রেমী কিংশুক মণ্ডল বলেন, ‘‘নেটমাধ্যমে এমন ভিডিয়ো দেখে উৎসাহী হয়ে অনেকেই বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ ছাড়াই সাপ ধরার চেষ্টা করতে পারেন। সাপ উদ্ধারকারীদের এ বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy