আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। —ফাইল ছবি।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাটি করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মিজানুর রহমান। ওই উপাচার্যকে বরখাস্ত এবং তাঁর নিয়োগের তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টে আর্জি করেছেন তিনি। মামলায় মিজানুরের বক্তব্য, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নিয়ম মেনে ওই উপাচার্যকে নিয়োগ করা হয়নি। মামলকারী মূলত দু’টি বিষয়কে সামনে রেখে আচার্যের উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন। প্রথমত, বর্তমান উপাচার্যের বয়স ৭০ বছর। দ্বিতীয়ত, তিনি অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার হলেও তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন এবং নবান্নের সংঘাতের কেন্দ্রে আলিয়ার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তের একাধিক বার সমালোচনা করেন।
গত ১৯ জুলাই কেরল ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এম ওয়াহাবকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ওই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ১৯ বছরের ছাত্র মিজানুর। মামলায় তাঁর দাবি, আলিয়ার নিয়ম মেনে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি। রাজ্যপাল প্রায় ৭০ বছর বয়সের এক ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব দিয়েছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ৬৫ বছরের বেশি কাউকে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা যায় না। এ ছাড়া ওই উপাচার্যের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মামলকারী। তাঁর দাবি, বর্তমান উপাচার্যের পর্যাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। তিনি কেবলমাত্র স্নাতক পাশ। ফলে তাঁর থেকে অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন অধ্যাপক, শিক্ষারত পিএইচডি এবং ডক্টরেট ডিগ্রিধারীদের কোনও কাগজপত্রে স্বাক্ষর করার অধিকার থাকতে পারে না। মামলাকারীর দাবি, ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষকতায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। কিন্তু এই উপাচার্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনও অভিজ্ঞতা নেই।
এই মামলার বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য ওয়াহাবের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল। তিনি বলেন, ‘‘এটা সত্যি আমার বয়স ৭০ বছর। শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যা বলা হয়েছে তারও বিরোধিতা করছি না। কিন্তু এটা বুঝতে হবে আমাকে অস্থায়ী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাই এখন এ নিয়ে কিছু বলব না। যে হেতু মামলা দায়ের হয়েছে আদালতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক।’’
শিক্ষক দিবসে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘কেরলের একজন আইপিএস অফিসার, যাঁর শিক্ষায় কোনও অভিজ্ঞতা নেই তাঁকে উপাচার্য নিয়োগ করে দিয়েছেন। ১০ বছর অধ্যাপনা করলে তবে প্রিন্সিপাল বা উপাচার্য হওয়া যায়। কিন্তু এ সব করে পুরো সিস্টেমকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত আমরা মানব না। অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব।’’ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এ নিয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। শীর্ষ আদালত উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছে। তবে রাজ্যপালের নিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তে এখনও পর্যন্ত করেনি সুপ্রিম কোর্ট। এই অবস্থায় হাই কোর্টে আলিয়া নিয়ে নতুন করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল। আগামী মঙ্গলবার মামলাটি প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। এই মামলায় রাজ্যপালকেও যুক্ত করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy