Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
মানিক-যোগ, হতে পারে তলবও
Recruitment Scam

ইডি-র নজরে আপ্ত সহায়ক

তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের দাবি, ২০১২ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য টেট-এর বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পর থেকেই বেআইনি নিয়োগের সলতে পাকানোর সূত্রপাত।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৬
Share: Save:

স্কুলে (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) নিয়োগের দুর্নীতিতে অন্যতম নিয়ন্ত্রক হিসেবে রাজ্য পুলিশের এক প্রভাবশালী কর্তার নাম উঠে আসছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ ইডি সূত্রের। এ বার ওই কাণ্ডে তদন্তের আতশকাচের নীচে এক প্রভাবশালী সাংসদের আপ্ত সহায়কও।

তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের দাবি, ২০১২ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য টেট-এর বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পর থেকেই বেআইনি নিয়োগের সলতে পাকানোর সূত্রপাত। তাঁদের অভিযোগ, ওই সাংসদের আপ্ত সহায়ক মারফত চাকরির জন্য নামের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে পাঠানো হত বলে আপাতত তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। ইডি সূত্রে খবর, সম্প্রতি পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের পরে তাঁর মোবাইল এবং সেখানে থাকা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের সূত্রে ওই আপ্ত সহায়কের নাম উঠে এসেছে।

ইডি সূত্রে দাবি, ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওই আপ্ত সহায়ক মারফত নামের তালিকা যে মানিকের কাছে পৌঁছেছে এবং তা অনুযায়ী বেআইনি ভাবে নিয়োগ হয়েছে, তার বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ মানিকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া গিয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসার দাবি করেন, ‘‘বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ওই আপ্ত সহায়ককে তলব করা হবে।’’

ইডি-র তদন্তকারীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের দু’ভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল:—

এক, ‘উপর মহল’ থেকে এই সমস্ত অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা পর্ষদে পাঠিয়ে দেওয়া হত। এ ক্ষেত্রে ওই প্রার্থীদের কাছ থেকে আগেই টাকা নিয়ে পরে তাঁদের নাম মানিককে পাঠিয়ে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হত। দুই, মানিক তাঁর নিজস্ব ‘মিডলম্যান’ মারফত টাকা নিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতেন।

এ ভাবে বেআইনি নিয়োগের দৌলতে গত এক দশকে শুধু প্রাথমিকেই কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে ইডি সূত্রে দাবি। তদন্তকারীদের তরফে আরও অভিযোগ, প্রাথমিকের পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম-দশমের শিক্ষক এবং গ্রুপ-সি পদেও ওই আপ্ত সহায়ক মারফত পাঠানো চাকরিপ্রার্থীর তালিকা অনুযায়ী বেআইনি নিয়োগ হয়েছে।

ইডি সূত্রে অভিযোগ, শাসকদলের বহু প্রভাবশালী নেতা মারফত বহু অযোগ্য প্রার্থী বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন। তেমন অনেক ক্ষেত্রেই ওই সাংসদের দফতর এবং আপ্ত সহায়কের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তালিকা তৈরি করে তা সরাসরি মানিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া ওই আপ্ত সহায়ক দেখাশোনা করতেন বলে ইডি সূত্রে অভিযোগ।

২২ জুলাই মানিকের যাদবপুরের দু’টি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রাথমিকে নিয়োগের প্রচুর নথি, কম্পিউটারের সিপিইউ-সহ ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই সব নথি ও বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম যাচাই করেই ওই আপ্ত সহায়কের নাম উঠে এসেছে বলে জানাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থাটির সূত্র। ইডি সূত্রের আরও দাবি, ওই সাংসদের অফিসে গিয়ে বেশ কয়েক বার ওই আপ্ত সহায়কের সঙ্গে নিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠক যে মানিক করেছেন, এমন তথ্যও তাদের হাতে এসেছে। অভিযোগ, মানিকের সঙ্গে ওই আপ্ত সহায়কের প্রায়ই হোয়াটসঅ্যাপ কলে কথা হত। কিছু ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে নিয়োগ পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Scam ED Manik Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy