নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পরে, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয় নদিয়ার বাসিন্দা মনোয়ার তরফদারের (৫৭)। পরিবারের দাবি, ‘মিথ্যা’ অভিযোগ সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। নাবালিকার মা, দাদু ও মামার বিরুদ্ধে গাংনাপুর থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ করেছেন মৃতের স্ত্রী। পুলিশ জানায়, তিন জনই পলাতক। গ্রামবাসীর একাংশ ওই নাবালিকা ও তার দুই মাসির বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগায় বলে অভিযোগ। পুলিশ ও দমকল গিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে।
মহারাষ্ট্রের পুণের একটি সংস্থায় কাজ করতেন মনোয়ার। সম্প্রতি তিনি বাইশ দিনের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। পরিবার ও প্রতিবেশীদের একাংশের অভিযোগ, নাবালিকার পরিবার তাঁর কাছে টাকা চেয়েছিল। না দিলে, ফাঁসানোর হুমকি দেয়। মনোয়ার রাজি হননি। পরে, কর্মস্থলে ফিরে জানতে পারেন, তাঁর বিরুদ্ধে ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘পকসো’ আইনে নাবালিকা-ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন মেয়েটির মা।
পরিবার সূত্রের দাবি, গত ১৯ মার্চ ভোরে মনোয়ার অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ঢোকেন। সম্ভবত তার আগেই তিনি বিষ খেয়েছিলেন। সোমবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে তিনি মারা যান। ময়না-তদন্তের পরে রাতে মনোয়ারের মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছলে, জনতা নাবালিকা ও তার দুই মাসির বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগায় বলে অভিযোগ। বুধবার রানাঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মণ্ডল বলেন, “ওই রাত থেকেই পরিবারগুলো এলাকাছাড়া বলে শুনেছি।”
মানোয়ারের ছেলে কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকেন। পুত্রবধূকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন মানোয়ারের স্ত্রী পরভিন তরফদার। এ দিন দুপুরে তিনি বলেন, “বিনা অপরাধে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। ওদের চূড়ান্ত শাস্তি চাইছি।”
ঘটনায় ‘পকসো’ আইনের অপব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। সে প্রসঙ্গে রাজ্যের নারী ও শিশুসুরক্ষা কমিটির অন্যতম উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, “সব আইনেরই অপব্যবহার সম্ভব। ওখানে কী হয়েছে, জানি না। তবে পকসো আইনে মামলা হওয়ার যোগ্য ৯৯ শতাংশ ঘটনার অভিযোগই হয় না।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)