বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকের প্রায় ১২০০০ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ নিয়ে আবার তৈরি হল জটিলতা। তবে এ বার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকেই সিদ্ধান্ত নিতে বললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির নির্দেশ, পর্ষদ যা সিদ্ধান্ত নেবে। তা আগামী ৪ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে আদালতকে। বিচারপতির এই নির্দেশে আশঙ্কা, এর ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশই নিতে পারবেন না ওই চার হাজার চাকরিপ্রার্থী।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া একটি নির্দেশ থেকে। বৃহস্পতিবার মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানান, উত্তরাখণ্ডের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, কেন্দ্র স্কুলে চাকরিরত শিক্ষকদের জন্য দেড় বছরের যে ডিএলএড প্রশিক্ষণ চালু করেছিল, তা নিলেও নতুন চাকরিপ্রার্থীরা চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কারণ হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ওই প্রশিক্ষণ শুধুমাত্র চাকরিরত শিক্ষকদের জন্যই চালু করা হয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা এখনও চাকরি পাননি তাঁরা দেড় বছরের ওই প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরির আবেদন করছেন। এই চাকরিপ্রার্থীরাই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনাচক্রে, বাংলাতেও ওই প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরির আবেদনকারী প্রায় ১২০০০ পরীক্ষার্থী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, তাঁদের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর সিদ্ধান্ত নিতে হবে পর্ষদকেই।
প্রসঙ্গত, প্রশিক্ষণ না নিয়ে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য ২০১৭ সালে ১৮ মাসের একটি প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুল (এনআইওএস)-এর মারফত ‘ওপেন অ্যান্ড ডিস্ট্যান্স লার্নিং’ কোর্স করানো শুরু হয়। কিন্তু চাকরিরতদের জন্য হলেও বহু চাকরিপ্রার্থী সেখান থেকে ১৮ মাসের ডিএলএড কোর্স করেন। তাঁদের অনেকে চাকরি জন্য আবেদনও করেন। সেই সংক্রান্ত একটি মামলাতেই গত ২৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, নতুন কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না এই ১৮ মাসের প্রশিক্ষণরতরা। তাতেই প্রভাব পড়েছে বাংলার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও।
২০২২ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা ১৮ মাসের কোর্স করেছেন। আইনজীবীরা মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁরা সুযোগ পাবেন না। আপাতত ৪ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোন সিদ্ধান্তের কথা আদালতকে জানায়, সে দিকে নজর সবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy