ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নারদা মামলায় গ্রেফতারও করেছিল সিবিআই। —ফাইল চিত্র।
নারদ মামলায় আদালতে হাজিরা দিলেন ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়েরা।
বৃহস্পতিবার সকালেই বিচারভবনে সিবিআই আদালতে হাজিরা দেন কলকাতার বর্তমান এবং প্রাক্তন মেয়র এবং কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক। ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবারই সকাল থেকে রাজ্যের জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে শাসকদলের নেতা-কাউন্সিলর-বিধায়কদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশিও। আদালতে ঢোকার পথে তিন জনই মন্তব্য করেন সিবিআই অভিযান নিয়ে। এমনকি, সে প্রসঙ্গে উঠে আসে বুধবার তৃণমূলের ধর্নাস্থলে বিজেপির জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার কথাও।
মন্ত্রী তথা শহরের মেয়র ফিরহাদকে বৃহস্পতিবারের সিবিআই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অমিত শাহ শহরে এসেছিলেন। তিনিই কোনও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন হয়তো। কিন্তু এ সব করেও বাংলায় পায়ের তলায় মাটি পাবে না বিজেপি। ওদের সংগঠন নেই। কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তৃণমূলকে টাইট করা যাবে না।’’
এর পরে বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। ওই ঘটনা ঘটার সময়ে বিজেপি বিধায়কদের নেতৃত্বে শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। যে শুভেন্দু নারদ মামলাতেও একজন অভিযুক্ত। যদিও ফিরহাদ সে প্রসঙ্গে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আশা করব, এ ব্যাপারে আইন আইনের পথে চলে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করবে।”
প্রসঙ্গত, বুধবার বিধানসভা চত্বরে শাসকদলের ধর্না চলাকালীন বিজেপি জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ধর্নায় উপস্থিত বিধায়কদের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে কর্মসূচি শেষ করতে বলেন, তখনই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়কেরা ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দিয়ে ওঠেন। এতেই জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গেই ফিরহাদ ওই মন্তব্য করেছেন।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারের সিবিআই তল্লাশি প্রসঙ্গে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মদন। তাঁর কাছে তৃণমূল কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তী এবং বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়িতে সিবিআই হানা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আমিও টিভিতে দেখেছি। সিবিআই তল্লাশি চলছে। তবে এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। নো কমেন্টস।’’ যদিও পরে মদন বলেন, ‘‘অমিত শাহ কাল এসেছিলেন...।’’ তবে সেই বাক্য শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ করেননি মদন। তাই কী প্রসঙ্গে শাহের কথা বলতে চেয়েছেন তা বোঝা যায়নি।
কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা শাসকদলের প্রাক্তন বিধায়ক শোভন আদালতে এসেছিলেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যেপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে। বৃহস্পতিবারের সিবিআই অভিযান প্রসঙ্গে শোভন বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সংস্কৃতির সার্বিক অবনমন হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, নারদ মামলা প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়। পরে ২০২১ সালে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয় ফিরহাদ, মদন, শোভন-সহ কলকাতার প্রাক্তন মেয়র প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। পরে অবশ্য জামিনে ছাড়া পান তাঁরা। এই মামলায় অভিযুক্ত শুভেন্দুকে অবশ্য গ্রেফতার বা জেরা করেনি সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy