দিন তিনেক আগে বারুইপুরের ঝিলে দেখা মিলেছিল তার। ভিন্দেশি অতিথি-পাখিটিকে ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছিল। রাতভর তাকে পাহারায় রেখেছিলেন সাধারণ মানুষ ও বনকর্মীরা। পরদিন সকালেই অবশ্য উড়ে যায় সে। মিউট সোয়ান নামে পাখিটিকে ফের দেখা গেল বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারের এক গ্রামে। সেখান থেকে পাখিটিকে খাঁচাবন্দি করে চিড়িয়াখানায় পাঠিয়েছে বনদফতর।
রাজহাঁসের মতো দেখতে কমলা ঠোঁটের ধবধবে সাদা পাখিটিকে গত সোমবার বারুইপুর-আমতলা রোডের পাশে নবনির্মিত সংশোধনাগারের কাছের একটি ঝিলে প্রথম দেখা যায়। বারুইপুরের ওই ঝিলে প্রায়ই দেখা মেলে পরিযায়ী পাখিদের। পাখিপ্রেমীদের আনাগোনা লেগে থাকে। কপিল বাগ নামে এক পাখিপ্রেমীর ক্যামেরায় ধরা পড়ে পাখিটি। এরপরে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই পড়ে যায়।
পাখিপ্রেমীরা জানান, এই মিউট সোয়ানের আস্তানা মূলত ইউরোপের দেশগুলিতে। শীতের মরসুমে উড়ে এদিক-ওদিক যায় বটে। তবে এত দূরে আসার কথা নয়। পশ্চিমবঙ্গে এই পাখি কখনও দেখা যায়নি বলে তাঁদের দাবি। বারুইপুরে ইউরোপের মিউট সোয়ান উড়ে এসেছে শুনে শ’য়ে শ’য়ে পাখিপ্রেমীর ভিড় জমে যায়। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।
প্রাথমিকভাবে বন দফতর মনে করে, অন্য পরিযায়ী পাখিদের মতোই পাখিটি স্বাভাবিক ভাবে উড়ে এসেছে এবং সেভাবেই ফেরত যাবে। তাই তাকে না ধরারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পাখিটিকে পর্যবেক্ষণে রাখতে রাতে ওই ঝিলে পাহারার ব্যবস্থা হয়। কয়েকজন পাখিপ্রেমী ও স্থানীয়রাও রাত জাগেন। পরের দিন ভোরে পাখিটি উড়ে যায়। ধরে নেওয়া হয়, নিজের দেশের দিকেই ফিরেছে সে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারের রামনগর এলাকায় আসুরালি গ্রামের একটি দিঘিতে পাখিটিকে দেখা যায়। গ্রামের পুকুরে হঠাৎ রাজহাঁসের মতো এমন বিশালাকার পাখি এসে পড়ায় শোরগোল পড়ে যায়।
স্থানীয়রা মাছ ধরার জাল দিয়ে পাখিটিকে ধরে ফেলেন। পরে বনকর্মীরা গিয়ে সেটিকে উদ্ধার করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের বিভাগীয় বন আধিকারিক মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “পাখিটি সম্ভবত বেশি দূরত্ব উড়তে পারছে না। কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে। তাছাড়া লোকালয়ে থাকলে বিপদের সম্ভবনাও রয়েছে। তাই পাখিটিকে ধরে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” জীব বৈচিত্র নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা শুভঙ্কর পাত্র বলেন, “প্রাথমিকভাবে পাখিটি পরিযায়ী বলেই মনে হচ্ছিল। তবে এ দিন যে ভাবে লোকালয়ের কাছে চলে এসেছিল, তাতে মনে হচ্ছে এটা কারও পোষাও হতে পারে। কোনওভাবে হয়ত পালিয়ে এসেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy